করোনা আবহে জৌলুসহীন মালদার কোঠাবাড়ির ১০০ বছরের পুরনো লক্ষ্মী পুজো
করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে এবছর জৌলুসহীন মালদা শহরের কোঠাবাড়ি এলাকার প্রায় ১০০ বছরের পুরনো লক্ষ্মী পুজোর। বিগত কয়েক বছর ধরে প্রাচীন মেলা ঘিরে উন্মাদনা দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। কিন্তু এবছর করোনা সংক্রমণের জেরে প্রাচীন এই পুজোর পাঁচ দিনের মেলা এবার একদিনের জন্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
তবে সেক্ষেত্রেও থাকছে করোনা স্বাস্থ্যসুরক্ষা বিধির জোর নজরদারি। সামাজিক দূরত্ব মেনে এই মেলা বেচাকেনা করতে হবে বিক্রেতাদের তাও প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মেলায় আগতদের ক্ষেত্রে মাস্ক স্যানিটাইজার আবশ্যিক করাও হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
তবে একদিনের মেলায় লাভের থেকে লোকসানই বেশি হবে বলে মনে করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাই লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে শতাব্দীপ্রাচীন এই মেলা করা নিয়েও কোন উন্মাদনা নেই ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, করোনা সংক্রমণের জেরে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। গত একমাস ধরে কোথাও কোন মেলা তারা করতে পারেন নি। যদিও বা লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে কোঠাবাড়ি এলাকায় এই মেলা তারা পাঁচ দিন ধরে করতেন। কিন্তু এবার মাত্র একদিন করা হবে। তাতে বিশেষ কোনো আয় হবে না, তাই এই মেলা করা নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি কোন ব্যবসায়ীই।
প্রসঙ্গত, ইংরেজবাজার পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কোঠাবাড়ি চুনিয়াপাড়ায় প্রায় ১০০ বছর ধরে হয়ে আসছে জেলার সর্ববৃহৎ লক্ষ্মীপুজো। এখানে দেবী লক্ষ্মীর সাথে কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, অন্নপূর্ণা, ব্রহ্মা, নারায়ন, শিব এবং রাম, লক্ষণ পূজিত হয়ে থাকেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১০০ বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন এলাকার জমিদার ক্ষিতিশ চন্দ্র রায়। প্রাচীন সেই রীতি মেনে আজও হয়ে আসছে জেলার সর্ববৃহৎ এই লক্ষ্মী পুজো। পুজো উপলক্ষে পাঁচদিন মেলা বসে। বিসর্জনের দিন নৌকায় করে দেবী লক্ষ্মীকে পুরাতন মালদার সদরঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এই উপলক্ষ্যে মেলা বসে। এরপর আবার কোঠাবাড়িতে নিয়ে আসা হয় দেবীকে। এরপর মহানন্দা নদীতে মায়ের বিসর্জন পর্ব করা হয়।