অভিষেক কেন এসএসসি প্রার্থীদের সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতা করলেন, ব্যাখ্যা দিলেন কুণাল
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসসির এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ কররা পর থেকই নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তিনি কোন অধিকারে সরকারে কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারেন, তা নিয়েই উঠে পড়েছে প্রশ্ন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসসির এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ কররা পর থেকই নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তিনি কোন অধিকারে সরকারে কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারেন, তা নিয়েই উঠে পড়েছে প্রশ্ন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কেউ নন, তিনি কী করে সমাধান সূত্র বের করতে বসলেন এবং চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের আশ্বাস দিলেন? এই বিতর্কের কড়া জবাব দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
এসএসসির নিয়োগ নিয়ে সমস্যার সমাধানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৎপর হওয়ায় তিনি অনধিকার চর্চা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছ। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ঘোড়া ডেঙিয়ে ঘাস খেতে চাইছেন। অভিষেক তো সরকারের কেউ নন। তাহলে তিনি কী করে এসএসসি প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারেন, তা নিয়ে মূলত প্রশ্ন ওঠে। তবে কি তিনি দল এবং সরকার তাঁর নিয়ন্ত্রণেই সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করে।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সেই প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অধিকারের মধ্যে থেকেই এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের সহায়তা করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি মানবিক হয়ে এসএসসি প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতিক্রমে এবং তাঁর নির্দেশক্রমেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়েছেন এসএসির বিক্ষোভরত প্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের।
কুণাল ঘোষ বলেন, কেন অনধিকার চর্চার অভিযোগ উঠছে অভিষেকের বিরুদ্ধে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের নেতা, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তৃণমূলের নেতা আমি তৃণমূলের সদস্য। আমরা আলোচনা করেচি এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। এখানে কোনও সরকারি আধিকারিক ছিল না। সরকারি স্তরে আলোচনা হবে ৮ অগাস্ট। সেদিন তা হবে শিক্ষামন্ত্রীর অফিসে। সেখানে থাকবেন এসএসসির চেয়ারম্যান, চাকরিপ্রার্থীদের দাবি মেটানোর চেষ্টা হবে সেদিন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মানবিক হয়ে সমস্যার আশু সমাধানের চেষ্টা করেছেন মাত্র।
শুক্রবার এসএসসি প্রার্থীদের আশু সমাধান সূত্র বের করার জন্য তাঁদের আট জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি আশ্বাস দেন তাঁদের চাকরির ব্যবস্থা করতে তিনি সচেষ্ট হবেন। সরকারি স্তরে বৈঠক করার জন্য তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করেনষ। সেইমতো আগামী ৮ অগাস্ট শিক্ষামন্ত্রীর অফিসে এসএসসি চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক চূড়ান্ত হয়েছে।
শুক্রবার অভিষেক যখন তাঁর ক্যামাক স্ট্রিট অফিসে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, তখন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা হাজির তাঁর অফিসের সামনে। তাঁরা দাবি জানাতে থাকেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা না করে তাঁরা এখান থেকে যাবেন না। যতক্ষণ না পর্যন্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন, ততক্ষণ অবস্থান চলবে, তাঁরা কেউ পিছু হটবেন না।
২০১৪-য় টেট উত্তীর্ণ জমায়েতকারীদের দাবি, এসএসসির এসএলএসটি অর্থাৎ স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের খবর পেয়েই তাঁরা এখানে এসেছেন। অভিষেকবাবু যাতে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেও একটা সুরাহার চেষ্টা করেন সেই আশায় বুক বেঁধে তাঁরা এসেছেন।
এরপর এসএসসি প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হয়ে গেলেও তাঁরা অবস্থানে অনড় থাকেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের কাছে বার্তা পাঠান শিক্ষামন্ত্রী সাতদিনের মধ্যে আপনাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আপনাদের দাবি শুনে তা সমাধানের চেষ্টা করবেন, তবু অনড় থাকেন তাঁরা। শনিবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও তাঁরা ওই অবস্থান থেকে সরে আসেননি। তারপর পুলিশ জোর করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন।
৫০০ দিনেরও বেশি এসএসসি প্রার্থীরা ধর্মতলায় অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের প্রতি মানবিক হয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এগিয়ে আসাও বিরোধীরা মানতে পারছেন না। তৃণমূলের অভিযোগ, বিরোধীরা চান না বিক্ষোভ মিটিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের আশু সমস্যার সমাধান করা হোক। তাঁরা চান বিক্ষোভ চলতেই থাকুক। সমস্যার সমাধান তাঁরা চান না।