এখনও স্বাস্থ্যকর নয় কলকাতার স্ট্রীট ফুড, জানালো সমীক্ষা
এখনও স্বাস্থ্যকর নয় কলকাতার স্ট্রীট ফুড, জানালো সমীক্ষা
ফুচকা থেকে এগ–চিকেন রোল, ঝালমুড়ি বা চাউমিন, কলকাতার স্ট্রীট ফুডের খ্যাতি দেশজোড়া। কিন্তু তা খেতে সুস্বাদু হলেও মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভা ও হু যৌথবাবে সমীক্ষা চালায় কলকাতার রাস্তার খাবারগুলির ওপর। তারা জানিয়েছে, জঞ্জাল ফেলা, বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধির অভাব এবং ভোজ্যতেলের বারংবার ব্যবহার সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যা রাস্তার খাবারকে অস্বাস্থ্যকর করে তুলেছে।
পুরনিগমের
সঙ্গে
হু,
ব্যুরো
অফ
ইন্ডিয়ান
স্ট্যান্ডার্স
(বিস)
ও
দু’টি
অন্য
সংস্থা
পুরনিগমের
চিহ্নিত
করা
শহরের
১০টি
জোনে
৪২টি
বিষয়ের
ওপর
খাবারের
দোকানগুলিতে
সমীক্ষা
চালায়।
তাদের
লক্ষ্যই
ছিল
সহজ
ও
প্রয়োগযোগ্য
পদ্ধতি
ব্যবহার
করে
কলকাতার
স্ট্রীট
ফুডকে
কি
করে
স্বাস্থ্যসম্মতভাবে
তুলে
ধরা
যায়।
জানা
গিয়েছে,
দু’টি
বিশদ
সমীক্ষায়
শহরের
১০৪টি
জায়গার
ও
নমুনা
পরীক্ষা
করার
জন্য
৫৪টি
জায়গায়
যায়
এই
দল।
শহরের বেশিরভাগ খাবারের দোকান নিরাপদ
সমীক্ষার ফল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উপ-মেয়র ও এমআইসি স্বাস্থ্য অতীন ঘোষ বলেন, ‘সমীক্ষার রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে অধিকাংশ রাস্তার দোকানের খাবারই অনেকটা নিরাপদ। তবে, আমরা এটিকে ১০০ শতাংশ নিরাপদ বলতে পারি না যেহেতু আর্থ-সামাজিক সমস্যার কারণে খাদ্য সুরক্ষার ন্যূনতম মানটি এখনও সমস্ত বিক্রেতারা বজায় রাখেন না।' এর আগে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমীক্ষায় উঠে এসেছিল যে ভারতের মধ্যে কলকাতার স্ট্রীট ফুড সবচেয়ে নিরাপদ। ক্রেতা ও খাবার বিক্রেতারা আগে থেকে অনেক বেশি সচেতন হয়ে গিয়েছেন এ বিষয়ে। অতীন ঘোষ বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে কলকাতা পুরসভা খাদ্য সুরক্ষার বিষয়ে পূর্ণভাবে অভিযান চালিয়ে চলেছে এবং প্রত্যেক বছরই হচ্ছে। খাদ্য সুরক্ষার নিয়মাবলী যেসব বিক্রেতারা লঙ্ঘন করেন তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আমাদের পুরনিগমের ১৬টি বোরোর জন্য ১৬ জন খাদ্য সুরক্ষা অফিসার রয়েছেন। যাঁরা সোম থেকে শনিবার প্রত্যেকটি খাবারের দোকানে গিয়ে পরীক্ষা করেন ও ওয়ার্ড-ভিত্তিক রিপোর্ট দেন।
এখনও কিছু বিষয়ের ওপর নজর দিতে হবে বিক্রেতাদের
এই সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক ইন্দিরা চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা জল, বিক্রেতার স্বাস্থ্যবিধি, কাঁচা মাল ও অন্য বিষয় সহ মোট ৪২টি দিক খতিয়ে দেখছি। তার মধ্যে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এমন রয়েছে যা এখনও কলকাতার রাস্তার খাবারকে অস্বাস্থ্যকর করে তুলছে। প্রথমত জঞ্জাল অপসারণ এখনও একটা বড় সমস্যা এবং তার পাশে রান্না করা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর।' তিনি জানিয়েছেন, বিক্রেতার উচিত রোজের জৈব জঞ্জালগুলিকে ফেলে দেওয়া। দ্বিতীয়ত বিক্রেতারা ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না, বিশেষ করে রান্নার সময় হাত না ধোওয়া। অনেকেই দেখে থাকবেন যে রান্না করার সময় বিক্রেতারা চুলকোচ্ছেন বা চুলে হাত দিচ্ছেন। হাতের গ্লাভস বদল করা হয় না এবং দিনের পর দিন একই গ্লাভস ব্যবহৃত হয়। তৃতীয়ত রান্নার জন্য অপিস্কার জল ব্যবহার করা হয়। ডাঃ চক্রবর্তী বলেন, ‘অন্য একটি চিন্তার বিষয় হল রান্নার তেলের পুর্নব্যবহার। তেল কোনও সময়ই পুনরায় গরম করে তা রান্নার কাজে ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে এটি শহরের স্ট্রিট ফুড বিক্রেতাদের মধ্যে স্পষ্ট। আমরা কলকাতার প্রত্যেকটি অংশে সমীক্ষা চালিয়েছি।'
বিক্রেতারা সচেতন হয়েছেন আগে থেকে
সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত সামগ্রিক তথ্যগুলির মধ্যে একটি হল অধিকাংশ বিক্রেতারা (৭৪-৭৬ শতাংশ) বিক্রয় স্থানে খাবার প্রস্তুত করে বিক্রি করে এবং তাই স্পট সচেতনতা তৈরি সম্ভব। বেশিরভাগ বিক্রেতাকে প্রাথমিকের তুলনায় মূল বিষয়গুলি সম্পর্কে আরও সচেতন দেখা গেছে।