রিকশা নিয়েই সুদূর লাদাখ ভ্রমণ কলকাতার 'রিকশাওয়ালার', গিনিজ বুকে নাম ওঠার অপেক্ষা
কিন্তু এটাই বাস্তব। সত্যেন দাস রিকশায় নিজের যাত্রা শুরু করেছিলেন কলকাতা থেকে। সেখান থেকে ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, শ্রীনগর এবং কার্গিল হয়ে গত ১৭ অগস্ট লাদাখের খারদুংলায় পৌছন। এই মোট সফরে তিনি সময় নিয়েছেন ৬৮ দিন।
কিছুদিন আগেই বাড়ি ফিরেছেন সত্যেনবাবু। এখন শুধু চোখে স্বপ্ন গিনিজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজের নামটা দেখার। তাঁর এই গোটা সফরের স্পনসর ছিল দক্ষিণ কলকাতার নাকতলা অগ্রণী ক্লাব। ক্লাবের সচিব পার্থ দে জানিয়েছেন, আমাদের হিসাব ছিল এই সফরের জন্য খরচ হবে ৮০,০০০ টাকা। ক্লাব সদস্যরা এই টাকা সংগ্রহ করে। সত্যেনবাবুর এই ইচ্ছাশক্তি, দৃঢ়সংকল্প মনোভাব এবং দুঃসাহসিক ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতায় আমরা মুগ্ধ। আর সেই কারণেই তাঁকে সমস্তরকম সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলাম।
নাকতলার সত্যেন দাসের নাম লিমকা গিনিজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে পাঠানো হয়েছে
গিনিজ বুকে নাম তোলার লক্ষ্য নিয়ে কিন্তু যাত্রা শুরু করেননি সত্যেনবাবু। লক্ষ্য ছিল রিকশাকে পরিবেশ বান্ধব যান হিসাবে মানুষের কাছে প্রচার করা। একই সঙ্গে বিশ্বশান্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
এই প্রথমবার নয় যখন সত্যেন দাস রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন সুদূর সফরে। ২০০৮ সালে হিমাচল প্রদেশের রোটাং পাসে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে রিকশা করে গিয়েছিলেন সত্যেনবাবু। কিন্তু এবারের সফরটা ছিল আরও অনেক কঠিন। চড়াই উতরাই রাস্তা। যখনই রাস্তার খাড়াই হয়েছে তখন রিকশা থেকে নেমে হাতে টেনে এবড়োখেবড়ো রাস্তা দিয়ে রিকশাকে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। সত্যেনবাবুর কথায়, "এটা খুবই পরিশ্রমের কাজ ছিল। সময়ও লাগছিল অনেক। কিন্তু এখানকার প্রাকৃতির দৃশ্য এতই মনোরম ছিল যে জীবনের সব কষ্ট পরিশ্রম এক নিমেষে ভুলে যাওয়া যায়।"
একা জঙ্গলে রাত কাটানো থেকে শুরু করে লেহতে সাদা চিতার মুখোমুখি হওয়ার মতো একাধিক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাও হয়েছে তাঁর এই সফরে। এই রোমাঞ্চই তাঁকে বারবার অজানার খোঁজে বেরিয়ে পড়ার উৎসাহ যোগায় বলে জানিয়েছেন তিনি।