চতুর্থী থেকেই নিরাপত্তার বেড়াজালে শহরকে মুড়ে ফেলছে কলকাতা পুলিশ
ইতিমধ্যেই তৃতীয় থেকে শহরের মণ্ডপে মণ্ডপে পূজা দেখতে শুরু হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির আশঙ্কায় আজ থেকেই পুজো দেখা শুরু করে দিয়েছেন উৎসবমুখর দর্শনার্থীরা।
ইতিমধ্যেই তৃতীয় থেকে শহরের মণ্ডপে মণ্ডপে পূজা দেখতে শুরু হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির আশঙ্কায় আজ থেকেই পুজো দেখা শুরু করে দিয়েছেন উৎসবমুখর দর্শনার্থীরা।
আগামীতে এই ভিড়ের পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়ার আশঙ্কা মাথায় রেখে, নিরাপত্তার কথা ভেবে ঢেলে সাজানো হয়েছে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বুধবার চতুর্থী থেকেই নিরাপত্তার বেড়াজালে মুড়ছে কলকাতা পুলিশ।
পুজোয় শহরবাসীর সুরক্ষায় শহরে দিন-রাত মিলিয়ে ৭,০০০ অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন থাকছেন। নজরদারির জন্য শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বসছে অতিরিক্ত ৭৪ টি সিসিটিভি ক্যামেরা ও ৪৬টি ওয়াচ টাওয়ার । লালবাজার কন্ট্রোল রুম থেকে চলবে দিনভর নজরদারি।
লালবাজার থেকে জানা গিয়েছে, চতুর্থীর দিন থেকেই শহরের বড় পুজো মণ্ডপ চত্বরে পুলিশ মোতায়েন থাকছে৷ পঞ্চমী থেকে ছোটো-বড় মিলিয়ে শহরের সব পুজোয় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। দিনে তিনটি শিফটে পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত এক বাহিনী নামানো হচ্ছে। সবথেকে প্রাইম টাইম, বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে ভোর পর্যন্ত, আরেক ধাপে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। রাত ১২টা থেকে পরের দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত থাকছে আরেকটি বাহিনী। শহরের বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চমী থেকে নবমী প্রায় ৪০০ পুলিশ পিকেট থাকছে। এছাড়াও থাকছে মোট ২৪টি এইচআরএফএস।
পাশাপাশি থাকছে ৭টি মোবাইল পেট্রলিং অ্যাসিস্ট্যান্ট ভ্যান, পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্স বুথ। আগুন লাগলে কীভাবে তার মোকাবিলা করা হবে, সেদিকেও নজর দিয়েছে কলকাতা পুলিশ৷ দমকলের গাড়ি যাতে তাড়াতাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছোতে পারে, সেজন্য থাকছে বিশেষ গাড়ি। শহরের বিভিন্ন জায়গায় থাকছে ২৮ টি পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স।
পুজোর ভিড়ে কেউ হারিয়ে গেলে তাঁদের জন্য থাকছে ৯টি মিসিং পারসনস স্কোয়াড। কেউ নিখোঁজ হলে তাঁর সন্ধানের জন্য খোলা থাকবে বিশেষ নম্বর (90029 99999)। এছাড়াও থাকছে কলকাতা পুলিশের হেল্পলাইন নম্বর ১০০।
শহরের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান, শপিং মল, এবং পার্কে নজরদারি চালানো হবে। লালবাজার কন্ট্রোল রুম থেকে চালানো হবে নজরদারি। ২৩টি মেট্রো স্টেশনেও নজরদারি চালানো হবে। মেট্রোর সিসিটিভির ওপরেও নজরে রাখা হবে কন্ট্রোল রুম থেকে।
দশমী থেকে দ্বাদশী পর্যন্তও তিন দফায় পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে বাজানো যাবে না৷ কেউ ডিজে বাজালে, এবং তা নজরে এলে, কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে লালবাজার। ২৪টি ঘাটে নজরদারি চালানো হবে। ঘাটগুলোতে থাকছে ৫ টি স্পিডবোট। প্রশিক্ষিত সাঁতারুদেরও রাখা হচ্ছে।
লালবাজার সূত্রে এও জানানো হয়েছে, গত বছরের মতো যেসব পুজো সমস্ত সুরক্ষাবিধি মেনে পুজো করবে, তাদের বাছাই করে পুরস্কৃত করা হবে।
এছাড়াও, পুজোর সময় শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তৎপর কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। গোটা শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়াররাও থাকছেন।
গাড়ি পার্কিংয়ের ক্ষেত্রেও নয়া উদ্যোগ নিচ্ছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। গাড়ি নিয়ে বেরোলে, গাড়ি চালক, এবং আপনার নম্বর গাড়ির কাচে লিখে রাখার কথা বলা হয়েছে। কোনওরকম জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে বা কোনও কারনে গাড়ি সরাতে হলে গাড়ির আরোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই এমন ভাবনা বলে জানানো হয়েছে।