ঘরে ফেরার কাতর আর্জি, লকডাউন আটকে অনাহারে দিন কাটচ্ছে কাশ্মীরি শালওয়ালাদের
ঘরে ফেরার কাতর আর্জি, লকডাউন আটকে অনাহারে দিন কাটচ্ছে কাশ্মীরি শালওয়ালাদের
না। তারা এরাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা নয়। তাই রেশন কার্ডের মাধ্যমে বা স্লিপ দেখিয়ে রেশন নেওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। আর পাঁচটা পরিযায়ী শ্রমিকদের মতো হয়তো কলকারখানায় কাজ করেন না, কিন্তু তাঁরাও পরিযায়ী। পেটের টানে সুদূর কাশ্মীর থেকে প্রতিবছরই এই বাংলায় ছুটে আসেন কাশ্মীরি শালওয়ালারা। কিন্তু এবছর লকডাউনের কারণে ঘরে ফেরা হয়নি তাদের। হারিয়েছেন রুজিরুটিও। টানা ঘরবন্দি অবস্থায় ফুরিয়েছে জমা রসদও। এই পরিস্থিতিতে একবেলা খেয়ে, কখনও না খেয়ে দিন যাপন করতে হচ্ছে কাশ্মীরি শালওয়ালাদের।
জুবের, এরশাদ, গুলাম, সাবির এঁরা প্রতিটি থাকে আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরবর্তী প্রতিবেশী রাজ্য কাশ্মীরের বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে কেউ জম্বুতাওয়ি, কেউবা কাশ্মীরের হাজরাবাদে, আবার কেউ কেউ থাকে শ্রীনগর, পুঙ্চ, দ্রাস, কার্গিল, সনমার্গে মতো একাধিক এলাকায়। সেখান থেকেই প্রত্যেক বছরই এ রাজ্যে এসে কলকাতা, দুই 24 পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদীয়ার মতো বিভিন্ন জেলায় বসতি গড়ে। ঘর ভাড়া নিয়ে মূলত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে থেকে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীতবস্ত্র ফেরি করেন। শীতের বিক্রিবাটা করে ফেব্রুয়ারির শেষে নিজের ঘরে ফেরে।
কিন্তু এবছর করোনা পরিস্থিতির জেরে সবকিছুই যেন গোলমাল হয়ে গেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মোকাবিলায় দেশ তথা রাজ্য জুড়ে হঠাৎ করেই লকডাউন ঘোষণা হাওয়ায় নিজের ঘরে ফিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগই পাননি তারা। তাই একদিকে বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা, সন্তান-স্ত্রী। তাদের মুখে দুবারা দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়া। রোগ-অসুখ-বিসুখ। এবং নিজেদের খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা, সবটাই অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় কাশ্মীরে নিজেদের বাড়ি ফিরতে চেয়ে কাতর আর্জি জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে বসতি গড়া জুবের, এরশাদ, গুলাম, সাবিররা।
এ রাজ্যের সরকারের কাছে তাদের আবেদন, 'আমাদেরকে বাড়ী ফেরার ব্যবস্থা করুক সরকার। অন্তত সরকার যদি অনুমতি দেয়, তাহলে নিজেরাই ঘরে ফেরার উদ্যোগ নিতে পারি।'
তারা
জানান,
তাদের
মধ্যে
কেউ
কেউ
২০০৯
সাল
থেকেই
এই
কাজ
করছেন।
কেউ
বা
তারও
আগে
থেকে।
এইরকম
পরিস্থিতিতে
কোনদিনও
পড়েননি।
বা
পড়তে
হবে
সে
কথা
ভাবেনি।
প্রত্যেক
বছরই
রমজান
মাসের
আগে
বাড়ি
ফিরে
যাই।
কিন্তু
এবার
!
যেটুকু
অর্থ
বা
খাবার-দাবার
আছে
তার
হিসেব
করেই
খেতে
হচ্ছে।'
আরও
জানান,
ঘরে
অসুস্থ
পেশেন্ট
রয়েছে।
প্রতিদিন
ডায়ালিসিস
করাতে
হয়।
এই
অবস্থায়
এই
ঘরে
ফেরার
খুবই
দরকার।
কিন্তু
কীভাবে
ফিরবেন?
বাড়ির
কথা
ভেবে
ভেবে
এখন
রাতের
ঘুমও
চলে
গিয়েছে।