রাজ্যে রুটি রুজির খোঁজ না পেলে আবারও পুরনো কাজে ফিরে যাওয়ার ভাবনা সদ্য কাশ্মীর ফেরত শ্রমিকদের
মৃত্যু ভয় কাটাতে নিজ বাসভূমিতে ফিরলেও কিছুতেই আগামীতে অন্নসংস্থানের ভয় দূর হচ্ছেনা সদ্য কাশ্মীর ফেরত বাঙালী শ্রমিকদের মাথা থেকে। রাজ্যে রুটি রুজির খোঁজ না পেলে আবারও পুরনো কাজ যোগ দেওয়ার ভাবনাচিন্তাও তারা ইতিমধ্যে শুরু করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।

২৯ শে অক্টোবর কাশ্মীরের কুলগামে মুর্শিদাবাদের পাঁচ বাঙালি শ্রমিকের হত্যার পর উপত্যকার সমস্ত বাঙালী শ্রমিককে রাজ্যে ফেরানোর ভাবনা চিন্তা শুরু করেন তৃণমূল সরকার। সেইমতো চলতি সপ্তাহের সোমবার জম্মু-কলকাতা এক্সপ্রেসে চড়ে ঘরে ফেরে অন্নের খোঁজে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া ওই শ্রমিকের দল।
সূত্রের খবর, মোট ১৩৮ জন বাঙালী শ্রমিকের মধ্যে ৫ জন অসমের বাসিন্দা। বাকি সকলেই পশ্চিমবঙ্গের। তাদের বেশিরভাগই শ্রীনগর এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আপেল প্যাকিংয়ের জন্য কাঠের বাক্স তৈরি কাজ করেছিলেন বলে জানা গেছে।
এই প্রসঙ্গে এক ঘর ফেরত শ্রমিক বলেন, ' সন্ত্রাসবাদের আতঙ্ক ও সর্বদা মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করেই আমরা এতদিন কাশ্মীরে কাজ করেছি। কিন্তু বর্তমানে সেখানে কাজ করাই দূরহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যহ কাজে যোগ দেওয়ার পরই আবার নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরতে পারবো কিনা সেই বিষয়ে সারাক্ষণ চিন্তা হতে থাকে।'
অপর এক শ্রমিক মহম্মদ মুস্তাফা ২৯ তারিখের হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী অবস্থা ব্যখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ' ভারতীয় সেনা আমাদের দ্রুত ঘরে ফিরে যেতে বলেন। তারা প্রতিদিন আমাদের ১২ ঘণ্টার নিরাপত্তা দিতে পারবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেয়।' ওই শ্রমিক আরও বলেন, 'এরপরই আমাদের জম্মু কাশ্মীর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেখান থেকে সোজা কলকাতা।'
কাশ্মীরে কর্মরত ওই শ্রমিকদের অনেকেই জানান হঠাৎ কাজ ছেড়ে দেওয়ায় বাকি থাকা বেতন দিতে অস্বীকার করে তাদের সংস্থার কর্তারা। বর্তমানে কর্মসংস্থান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কাশ্মীর ফেরত মোস্তাফা বলেন, ' আমরা বর্তমানে তীব্র অর্থকষ্টের মধ্যে দিন চালাচ্ছি। আগের যা অর্জিত অর্থ তাও শেষের পথে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যদি দ্রুত আমাদের জন্য কোনও বিকল্প কাজের ব্যবস্থা না করতে পারলে আমাদের আবার কাশ্মীরেই ফিরে যেতে হবে।'
রুটিরুজির সংশয় নিয়েই কাশ্মীর থেকে ফেরত এসেছে বাঙালি শ্রমিকের দল