মুকুল বনাম দিলীপের দ্বন্দ্বে কৈলাশকে ম্যাচ রেফারির তকমা! খোঁচা তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের
মুকুল বনাম দিলীপে আড়াআড়ি বিভাজন! কৈলাশকে ম্যাচ রেফারি করে খোঁচা সাংসদের
একুশের নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপিতে অন্তর্দ্বন্দ্বে বেশ মজা পাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল দেখছে বিজেপিতে মুকুল বনাম দিলীপ দ্বন্দ্ব কতদূর গড়ায়। যুব মোর্চায় রদবদল নিয়ে যেভাবে বিজেপিতে আড়াআড়ি বিভাজন হয়ে পড়েছে, তাতে রাজনৈতিক মহল যেমন সিঁদুরে মেঘ দেখতে পাচ্ছে। তেমনই তৃণমূল কংগ্রেসও সজাগ দৃষ্টি রেখেছে বঙ্গ বিজেপির প্রতিটা পদক্ষেপে।
মুকুল-ঘনিষ্ঠ বনাম দিলীপ-ঘনিষ্ঠের লড়াই
সম্প্রতি বিজেপিতে নয়া মাত্রা পেয়েছে যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে মুকুল-ঘনিষ্ঠ বনাম দিলীপ-ঘনিষ্ঠের লড়াই। শুধু বাংলায় সীমাবদ্ধ থাকেনি এই অন্তর্দ্বন্দ্ব, তা পৌঁছে গিয়েছে সুদূর দিল্লিতে। এমনকী এর মধ্যে মাথা গলিয়ে দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও শিব প্রকাশ।
মুকুলের সমর্থনে কৈলাশরা, তবু দিলীপ অনড়
কৈলাশ ও শিবপ্রকাশ মুকুল ঘনিষ্ঠের সমর্থনে গলা ফাটানোয়, দিলীপ ঘোষ পড়েছেন বেকায়দায়। দুই কেন্দ্রীয় নেতা মুকুলের সমর্থনে গলা মেলালেও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যুব মোর্চার কমিটিতে কোনও পরিবর্তন তিনি চান না। অর্থাৎ যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক পদে মুকুল ঘনিষ্ঠের অনুমোদন তিনি মেনে নেবেন না।
তৃণমূল বেজায় খুশি, টুইট বার্তা নুসরতের
এইসব দেখে তৃণমূল বেজায় খুশি। তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান তো টুইট করে বসেছেন বিজেপির এই কোন্দল শুনে। তিনি টুইট করেছেন, ‘সৌমিত্র খান এবং দিলীপ ঘোষের অন্তর্দলীয় লড়াইয়ে কে জেতেন দেখতে দেখতে পপকর্ন খাওয়া যাক।‘ নুসরত এই লড়াই যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খান বনাম বিজেপির মূল সংগঠনের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মধ্যে হচ্ছে বললেও নেপথ্যে কিন্তু রয়েছেন বাংলার রাজনীতির ‘চাণক্য' মুকুল রায়।
সৌমিত্র বনাম দিলীপ, ম্যাচ রেফারি কৈলাশ!
শুধু সৌমিত্র খান, দিলীপ ঘোষের কথায় শেষ নয় নুসরতের টুইট। তিনি টুইটে উল্লেখ করেছেন, সৌমিত্র বনাম দিলীপের অন্তর্দলীয় কোন্দলে ম্যাচ রেফারির ভূমিকা নিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষখ তথা কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। উল্লেখ্য, বিজয়বর্গীয়ই মুকুল-দিলীপের দ্বন্দ্ব মেটাতে অমিত শাহের দূত হয়ে এসেছিলেন।
বিভাজন! কৈলাশ বিজয়বর্গীয় মুকুলের সমর্থনে
প্রাথমিক স্তরে মুকুল-দিলীপের দ্বন্দ্ব মেটালেও যুব মোর্চার সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে জল গড়িয়ে গিয়েছে বহুদূর। এখন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ই মুকুল-ঘনিষ্ঠ নেতাকে বিজেপি যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক করতে চাইছেন। সেইজন্য দিলীপ ঘনিষ্ঠ প্রকাশের দাসের নাম বাদ দিতে তিনি দিল্লি পর্যন্ত দরবার করেছেন।
আর পরিবর্তন চান না দিলীপ ঘোষ
এরপর শনিবার বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে কৈলাসের সঙ্গে বৈঠক হয় দিলীপ ঘোষের। সেখানে দিলীপবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক পদে তিনি কোনও পরিবর্তন চান না। অর্থাৎ তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রকাশ দাসকে সরিয়ে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ শঙ্কুদেব পাণ্ডার অনুমোদন তিনি দেবেন না।
সৌমিত্র স্বজনপোষণ করেছেন বলে অভিযোগ
গত রবিবার যুব মোর্চার রাজ্য কমিটি প্রকাশ করেন যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। জেলা সহ সভাপতি পদে সৌমিত্র স্বজনপোষণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অর্থাৎ জেলায় তিনি সভাপতি পদে তাঁর নিজের লোককেই শুধু বসিয়েছেন বলে দলের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়। যার জেরে সেই তালিকা বাতিল হয়ে যায়।
শঙ্কু বনাম প্রকাশ! বিজেপিতে ঘোর দ্বন্দ্ব
তারপরই যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক পদে দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ প্রকাশ দাসের অনুমনোদন নিয়ে প্রশ্নে ওঠে। কৈলাশ বিজয়বর্গীয় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ এই পদে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ শঙ্কুদেব পাণ্ডাকে আনতে চান। তা নিয়েই বিজেপিতে দ্বন্দ্ব বাধে। তড়িঘড়ি সৌমিত্রকে ডেকে পাঠানো হয় দিল্লিতে।
তিনজনেই যে মুকুল রায়ের খাস লোক
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, যুব মোর্চার রাজ্য কমিটিতে বদল এলে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ নেতাদের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। এখন দিলীপ ঘোষের পাল্লাই ভারী রয়েছে। তাই প্রকাশ দাসের বদলে শঙ্কুদেব পাণ্ডার অনুমোদন তিনি চাইছেন না। সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা আবার শঙ্কুদেব পাণ্ডা তিনজনেই মুকুল রায়ের খাস লোক থেকে যাবেন যুব মোর্চার মাথায়। সেটা হতে দিতে চান না মুকুল রায়।
তৃণমূলে ধস নামিয়ে দিল বিজেপি, ২০২১ নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলে থাবা বসাল পদ্ম