পুরনো সৈনিকদেরই ফের রাজ্যে সক্রিয় করছে বঙ্গ বিজেপি, তৈরি ব্লু প্রিন্ট
পুরনো সৈনিকদেরই ফের রাজ্যে সক্রিয় করছে বঙ্গ বিজেপি, তৈরি ব্লু প্রিন্ট
ভোটের পরেই মুকুল রায়কে (mukul roy) হারিয়েছে বিজেপি (bjp)। দলে যোগ দেওয়ার পরে থেকে যাঁর পাশে মুকুল রায়কে বেশি দেখা যেতো তাঁকে অবশ্য মুকুল রায়কে নিয়ে সেরকম কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি প্রকাশ্যে। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তথা সভাপতি জেপি নাড্ডার (jp nadda) নির্দেশে বাংলার রাজনীতি নিয়ে ফের সক্রিয় কৈলাশ বিজয়বর্গীয় (kailash vijayvargiya)। গতমাসের শেষ সপ্তাহের পর ফের দিল্লিতে বৈঠক করলেন তিনি। দিল্লিতে হওয়া এই বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যের বেশ কয়েকজন নেতা।
দিল্লিতে সক্রিয় কৈলাশ
বিজেপির লক্ষ্য ছিল ২০০ পার করা। কিন্তু তারা তিন সংখ্যাতেও পৌঁছতে পারেনি। বলা হয় কৈলাশ নিজে ছাড়াও যাঁর চোখ দিয়ে রাজ্য বিজেপিকে দেখতেন, সেই বনুধ মুকুল রায় ফিরে গিয়েছেন তাঁর পুরনো আস্তানায়। মুকুলদার এই ঘরে ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়া ভোটের ফল বেরনোর পরে বড় ধাক্কা খায় রাজ্য বিজেপি। যার পরেই বিজেপির রাজ্য নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কেই নিশানা করেছিলেন। সেই সময় থেকে বেশ কিছুদিন সামনে থেকে বাংলা নিয়ে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়নি। তবে সভাপতি জেপি নাড্ডার নির্দেশে আস্তে আস্তে সক্রিয় হচ্ছেন তিনি। যেমনটি হল মঙ্গলবার।
দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বৈঠক
মঙ্গলবার সকাল দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বৈঠক করেছিলেন রাহুল গান্ধী। দেশের চোদ্দটি বিরোধীদলের প্রতিনিধিদের নিয়ে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সংসদে আক্রমণ জোরদার করতে। তবে বিকেলের দিকে কনস্টিটিউশন ক্লাবে বৈঠক করেন বঙ্গ বিজেপির নেতানেত্রীরা। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ও। ওই বৈঠক দেড় ঘন্টা ধরে চলে বলে জানা গিয়েছে। ওই বৈঠকে তাঁর সঙ্গে হাজির ছিলেন অপর দুই কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ এবং অমিত মালব্যও।
নাড্ডার নির্দেশে সক্রিয় হয়েছিলেন গত মাসেই
তবে শুধু মঙ্গলবারেই নয়, সভাপতি জেপি নাড্ডার নির্দেশে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় সক্রিয় হয়েছিলেন গত মাসেই। বিভিন্ন সর্বভারতীয় কর্মসূচিতে রাজ্য বিজেপিকে সক্রিয় করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরেই কৈলাশ বাংলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসে জানিয়েছিলেন, সংগঠনের কাজে ঢিলেমি বরদাস্ত নয়। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল গত মাসে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বাংলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করলেও তা ছিল ভার্চুয়াল বৈঠক। সেই বৈঠকে রাজ্যের দুই সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য, অরবিন্দ মেনন ছাড়াও বাংলার সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীও হাজির ছিলেন।
তিনটি বড় যাত্রা করতে চলেছে বিজেপি
সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যে তিনটি বড় যাত্রা করবে বিজেপি। কোন পথে যাত্রা হবে তা ঠিক করবেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। এছাড়াও শহিদ পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করবেন সাংসদ এবং বিধায়করা। রাজ্যের প্রধান বিরোধীদলের লক্ষ্য হল সর্ব সাধারণের সামনে শাসকদলের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগকে তুলে ধরা।
নতুন চারমন্ত্রীকে সংবর্ধনার সিদ্ধান্ত বাতিল
এছাড়াও যে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা হল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া নতুন চারমন্ত্রীকে রাজ্যে কোনও সংবর্ধনা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত। বরং এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
জন আশীর্বাদ যাত্রার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি
দিন কয়েক আগে জানা গিয়েছিল বিজেপি দেশের ১৯ টি রাজ্যে জন আশীর্বাদ যাত্রা বের করবে। সেই যাত্রার মন্ত্রিসভায় নতুন যোগ দেওয়া ৪৩ জন মন্ত্রীর যোগ দেওয়াকে আবশ্যিক করা হয়েছিল. বলা হয়েছিল মন্ত্রীরা নিজেদের কেন্দ্র থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ কিমি যাত্রা করবেন। নিজের জেলায় পৌঁছনোর আগে তাঁদের তিন থেকে চারটি সংসদীয় ক্ষেত্রে ঘুরতে হবে। এই যাত্রায় মন্ত্রীর রাত কাটাবেন গ্রামে কিংবা ছোট শহরে, যা তাঁদের যাত্রা পথে পড়বে। সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ অর্থাৎ সমাজকর্মীই হোন কিংবা রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়াবিদ, সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা, মনিপুরে এই যাত্রা সংগঠিত করার কথা বলা হয়েছিল।