বিজেপিতে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে লড়াই চলছে মুকুলের! জানেন, কে করলেন এমন অভিযোগ
এতদিন মুকুল-দিলীপ সংঘাত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলছিল শুধু। এবার একেবারে প্রকাশ্যে এই অভিযোগ করে বসলেন তৃণমূলের ডাকসাইটে এক মন্ত্রী।
মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই লড়াইটা শুরু হয়েছিল। নোয়াপাড়া উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর লড়াইটা আরও প্রকট হয়ে গেল। এতদিন এসব নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলছিল শুধু। এবার একেবারে প্রকাশ্যে এই অভিযোগ করে বসলেন তৃণমূলের ডাকসাইটে এক মন্ত্রী। তিনি বললেন, 'ওদের দলেই দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মুকুল রায়ের লড়াই চলছে।'
[আরও পড়ুন:গোয়েন্দা লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে মুকুলের পিছনে! কোণঠাসা হয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ]
উল্লেখ্য, নোয়াপাড়া কেন্দ্রে মুকুল রায় নিজের অনুগামী কাউকে বিজেপির প্রার্থী করতে প্রথম থেকেই তৎপর ছিলেন। তৃণমূলের কাউকে ভাঙিয়ে এনে প্রার্থী করলে আরও ভালো ফল মিলবে- এই আশায় মুকুল রায়ের উপর ভরসাও করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিন্তু প্রথম থেকেই চেয়েছিলেন সংগঠনের কেউ প্রার্থী হন। তা নিয়ে বিবাদ ছিলই বিজেপিতে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে মুকুল রায় বোঝাতে সমর্থ হয়েছিলেন যে, তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনতে পারবেন। সেই কাজে অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ রণে ভঙ্গ দিলেন খোদ প্রার্থীই। বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দিয়েছিল তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মঞ্জু বসুর নাম। তারপরই বেঁকে বসেন মঞ্জু।
মঞ্জু বসু গাছে তুলে মই কেড়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুললেও, তৃণমূলের 'গেমপ্ল্যান'-এ ধরাশায়ী মুকুল রায়। বিজেপিতেও তিনি কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এই ঘটনার পর মুকুল রায়ের উপর আস্থা হারিয়ে দিলীপ ঘোষের মনোনীত প্রার্থীকেই বেছে নেয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুধু নোয়াপাড়াই নয়, উলুবেড়িয়াতেও দিলীপ ঘনিষ্ঠ নেতাই বিজেপির প্রার্থী হন।
এরপরই তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তোপ দাগেন, 'আসলে মুকুল রায় বিজেপিতে গিয়ে কর্তৃত্ব ফলাতে চাইছেন। তাঁর সঙ্গে লড়াই চলছে দিলীপ ঘোষের। তারই ফল এই ঘটনা। মঞ্জু বসুকে না জানিয়েই তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে মঞ্জু বসুর উচিত তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা।'
আর মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের মধ্যে যে লড়াই চলছে, তা আগেও বেশ কিছু ঘটনায় ইঙ্গিত মিলেছিল। মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগদানের আগে রাজ্যের তরফে নানা বাধার পাহাড় তৈরি করা হয়েছিল। আর উভয়ের মধ্যে যে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল, তা বোঝা গিয়েছিল মুকুলের মন্তব্যে। মুকুল রায় দিলীপ ঘোষকে পাশে বসিয়ে বলেছিলেন, আমার দুই ক্যাপ্টেন- দিল্লিতে অমিত শাহ, রাজ্যে দিলীপ ঘোষ।
তারপর দিলীপ ঘোষ নানা সভায় মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে তিনিই 'বস'। কেউ কেউ 'বস' হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিনি সেসব মানবেন না। মুকুল রায়কে চাটনি, ঘি-এর সঙ্গে তুলনা এই লড়াইয়ের অঙ্গ বলেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হচ্ছিল। এবার নোয়াপাড়া বিতর্কে তা ফের প্রকট হয়ে দেখা দিল।