'ব্যক্তিগত কারণে' পাড়ুই মামলা থেকে সরলেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত, জল্পনা তুঙ্গে
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট শুরুর আগের রাতে বীরভূমের পাড়ুই গ্রামে নৃশংসভাবে খুন হন সাগর ঘোষ। তিনি একটা সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে। সেই কারণে অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশেই তাঁকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বিচার না পেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাগর ঘোষের ছেলে হৃদয় ঘোষ। মামলাটি চলছিল বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে। তদন্তের স্বার্থে তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজি-র নেতৃত্বে চার সদস্যের 'সিট' (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) গড়েছিলেন। তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় ডিজি-কে হাই কোর্টে তলবও করেন। যদিও ডিজি আসেননি। এই মামলায় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করলেও শীর্ষ আদালত তা ফের হাই কোর্টেই ফিরিয়ে দেয়।
৯ এপ্রিল মঙ্গলকোটের একটি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই ছবি ১০ এপ্রিল খবরের কাগজে প্রকাশিত হওয়ায় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাজনীতিক কারণেই কি অনুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ? তখন রাজ্য সরকার কিছু না জানালেও এদিন অর্থাৎ শুক্রবার জানায়, ওই ছবিটি জাল। সংবাদমাধ্যম ইচ্ছাকৃতভাবে জাল ছবি ছেপেছে। ক্ষুব্ধ বিচারপতি পাল্টা বলেন, তা হলে ১০ এপ্রিল তা জানানো হয়নি কেন? এর পরই হঠাৎ তিনি ঘোষণা করেন, "ব্যক্তিগত কারণে আমি এই মামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে অপারগ। তাই মামলা থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। তবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই মামলা আমাকে নাড়া দিয়ে যাবে।" বিচারপতির এমন আচমকা সিদ্ধান্তে নানা জল্পনা দানা বাঁধছে।
বিচারপতির এই মন্তব্যে হতভম্ব হয়ে পড়েন হৃদয় ঘোষ। তিনি আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, "কবে সুবিচার পাব, জানি না। তবে আদালতের ওপর আস্থা রাখছি।"