মমতার ঘনিষ্ঠ মহলে লুকিয়ে বিজেপির 'চর'! নেত্রীর দ্বিতীয় আসনে লড়ার খবর নাড্ডাকে দেন তিনি
নন্দীগ্রামে তখনও ভোটগ্রহণ পর্ব চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বয়ালের বুথে বসে বিজেপির 'বহিরাগত'দের নিয়ে পরপর অভিযোগ করে যাচ্ছেন। সেই সময় বাংলার অন্য প্রান্তে ভাষণ রাখছেন বিজেপি নেতা তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেখানে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, নন্দীগ্রামে মমতা হারছেন, এবং রাজ্যের অন্য কোনও কেন্দ্রে ভোটে লড়তে দেখা যাবে তাঁকে। আর এরপর থেকেই শুরু হয় দ্বিতীয় কেন্দ্র থেকে মমতার ভোটে লড়া নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। আর সেই প্রেক্ষিতেই এবার চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
'মমতার ঘনিষ্ঠরাই এই কথা জানিয়েছেন আমাকে'
এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা দাবি করেন, তৃণমূল সুপ্রিমো যে অন্য কোনও আসন থেকে লড়তে পারেন, সেই খবর তিনি পেয়েছেন মমতার ঘনিষ্ঠ মহল থেকেই। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে নাড্ডা এদিন বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের রাজনৈতিক ছক কষছেন। সেটার বিষয়ে তিনি ভালো জানবেন। তবে আমাদের কাছে খবর এসেছে তিনি অন্য একটি কেন্দ্রে ভোটে লড়ার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠরাই এই কথা জানিয়েছেন আমাকে। তিনি যে নন্দীগ্রাম থেকে হারছেন সেটা নিশ্চিত।' এবং জেপি নাড্ডার এই মন্তব্যের পরই জল্পনা শুরু হয়, তবে কি মমতার ঘনিষ্ঠ মহলে এমন কেউ আছেন যিনি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। এবং তৃণমূলের গোপন সব খবর গেরুয়া শিবিরে পৌঁছে দিচ্ছেন।
'বিজেপির জয় পুরোপুরি নিশ্চিত'
এদিন জেপি নাড্ডা আরও দাবি করেন, 'পশ্চিমবঙ্গে আমরাই সরকার গঠন করছি। আমরা আভূতপূর্ব একটি ফলাফল করতে চলেছে এই নির্বাচনে। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে সরকারের থেকে সরাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। প্রথম দুই দফাতেই এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে তৃণমূল কংগ্রেস যাচ্ছে এবং বিজেপি আসছে। বিজেপির জয় পুরোপুরি নিশ্চিত।'
মমতার দ্বিতীয় আসনে লড়া নিয়ে জল্পনা
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় আসনে লড়া নিয়ে জল্পনা ছিল প্রথম থেকেই। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তার ইঙঅগিত দিয়েছিলেন। নন্দীগ্রামে নিজের নাম ঘোষণা করার পর তিনি জানিয়েছিলেন পরে টলিগঞ্জ থেকেও তিনি লড়তে পারেন। অবশ্য নতুন করে এই জল্পনা শুরু হয় যখন বীরভূমের মুরারই বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী বদলের খবর প্রকাশ্যে আসে।
বীরভূমের মুরারই আসন নিয়ে জল্পনা
নন্দীগ্রামে ভোটগ্রহণ হয় ১ এপ্রিল। এর একদিন আগে, অর্থাৎ ৩১ মার্চ বীরভূমের মুরারই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বদল নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। সেখানে কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী মোশারফ হোসেনকে নাকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ফোন করে তৃণমূলের টিকিটে লড়ার প্রস্তাব দেন। উল্লেখ্য, তৃণমূলের পূর্ব ঘোষিত প্রার্থী আবদুর রহমান করোনায় আক্রান্ত। তবে সেখান থেকেই জল্পনা শুরু হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি নিজে সেই আসন থেকে লড়তে পারেন। সেই জল্পনা বাড়িয়ে এই বিষয়ে বিভিন্ন দাবি করতে থাকেন বিজেপি নেতারা। অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদীরাও এই দাবি তোলেন।
পাল্টা চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার দাবি করেছেন যে তাঁর গ্রামের বাড়ি বীরভূমে। সেই সূত্রকে টেনে রাজনৈতিক মহলে আরও জল্পনা বাড়ায় প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের টালবাহানা। তবে তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় আসনে লড়া নিয়ে বিজেপির দাবিকে মিথ্যাচার বলে উড়িয়ে দেয়। পাল্টা ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বারাণসীতে মোদীর বিরুদ্ধে মমতার ভোটে লড়ার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় ঘাসফুল শিবির।