ভারতজুড়ে জাল ছড়িয়েছে জেএমবি, হদিশ আন্তঃরাষ্ট্র জালনোট পাচার চক্রের
কলকাতা, ২৭ সেপ্টেম্বর : এখন জেএমবির টার্গেটে ভারতও। গোটা দেশজুড়েই জাল বিস্তার করেছে বাংলাদেশের এই জঙ্গি সংগঠন। ভারতে জাল বিস্তার করতে অসমকেই করিডোর করেছে জেএমবি। স্লিপার সেলের মাধ্যমেই গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে জেএমবি-র সদস্যরা। এসটিএফ-এর গোয়েন্দাদের জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর এই তথ্য।
ধৃত ছয় জঙ্গিকে জেরা করে আন্তঃরাষ্ট্র জালনোট চক্রেরও হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সোমবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দর এলাকা থেকে জাল নোট চক্রের পান্ডা অসীম সাহাকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। দীর্ঘদিন ধরেই অসীম গোয়েন্দাদের টার্গেটে ছিল। তার সঙ্গে এদিনই জঙ্গি-যোগও পেয়েছে এনআইএ। সে যে গোপনে ঘাঁটি গেড়েছে কলকাতাতেই, তাও জানতে পারেন তদন্তকারী অফিসাররা।
সেইমতো রাতভর অভিযান চালিয়ে বিমানবন্দর এলাকা থেকে অসীমকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় এনআইএ। সে-ই মূলত জালনোট এনে এজেন্টদের হাতে তুলে দিল। তারপর তা ছড়িয়ে পড়ত গোটা দেশে। তাকে জেরা করে এই চক্রের অন্য পান্ডাদের জালে পুরতে চাইছে আইএনএ।
খাগড়াগড় কাণ্ডের পরই এপার বাংলায় জেএমবি সংগঠন গজিয়ে ওঠার কথা প্রকাশ্যে আসে গোয়েন্দাদের। তারা যে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, গোটা ভারতজুড়েই তাদের জাল ছড়িয়েছে, তা অনুমান করলেও কোনও প্রমাণ পাচ্ছিল না তদন্তকারী সংস্থাগুলি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ এই তদন্তে হাত লাগিয়েও খাগড়াগড় কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডদের জালে পুরতে পারেনি। এনআইএ-র সেই অসম্পূর্ণ কাজটাই রবিবার রাতে করে দেখিয়েছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। অসম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে ছ'জনকে গ্রেফতার করার পরই অনেক কিছুই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
ধৃত জঙ্গিদের ৬ অক্টোবর পর্যন্ত নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন গোয়েন্দারা। সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় জেরা চলছে। সেই জেরাতে উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। কীভাবে ভারতে জাল বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে তারা? কেন অসমকেই করিডোর করল তারা? গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন অনেক কিছুই। বাংলাদেশের রাজশাহী-সিলেটে মূল ঘাঁটি জেএমবি-র।
সেখান থেকে এদেশের অসমে যোগাযোগ সবথেকে সুবিধাজনক। অসম থেকে দু'দেশেই কন্ট্রোল করা সুবিধা হত। সেই কারণেই স্লিপার সেল তৈরি করা হয়েছিল অসমের শিলচরে। অসম থেকেই গোটা দেশে নিয়ন্ত্রণ করা হত জঙ্গি-র্যাকেট। প্রাথমিকভাবে জালনোট ছড়িয়ে দেওয়াই তাদের লক্ষ ছিল। পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতেও এই জঙ্গি সংগঠন জাল বিস্তার করেছে। এখন এই জাল কাটাই তদন্তকারীদের মূল লক্ষ্য। ছয় জঙ্গিকে জেরা করে বাকিদেরও অবিলম্বে গ্রেফতার করতে চাইছেন গোয়েন্দারা।