'জনতা কার্ফুর মধ্যেও মমতা রাজনীতি করছেন', করোনা প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগড়ে কোন ঘটনা জানালেন অগ্নিমিত্রা
'জনতা কার্ফুর মধ্যেও মমতা রাজনীতি করছেন', করোনা প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগড়ে কোন ঘটনা জানালেন অগ্নিমিত্রা
অজানা শত্রু। অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। গোটা মানবসভ্যতা ত্রস্ত একযোগে। কীভাবে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ দমন করা যাবে, তা কেউ জানে না! এমন পরস্থিতিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত জনতা কার্ফু জারি করেছেন। যাতে এই ভাইরাস আর না ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে, এই সময়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদী বিরোধী রাজনীতিতে মগ্ন, বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। 'ওয়ান ইন্ডিয়া বেঙ্গলি'র এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে তিনি উগড়ে দিয়েছেন ক্ষোভ। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে করোনা ইস্যুতে বিজেপি নেত্রীর ব্যক্তিগত কিছু উদ্যোগের প্রসঙ্গও।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা 'জনতা কার্ফু' নিয়ে আপনি নিজে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন ?
অগ্নিমিত্রা:আমাদের যৌথ পরিবার। আমার সকলেই বাড়িতে । আমি নিজেও স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে।আমার ফ্ল্যাটই নয়, গোটা সোসাইটিতেই কেউ বের হচ্ছি না। গত ২ দিন ধরে আমি বাড়িতেই রয়েছি স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে।বিকেল ৫ টাতেও যে কর্মসূচি রয়েছে তার জন্যও আমরা প্রস্তুত।
বিকেল ৫ টার কর্মসূচি নিয়ে কী প্রস্তুতি?
অগ্নিমিত্রা: সকাল থেকেই আমরা যেরকম নির্দেশ এসেছে তা পালন করছি। আর বিকেলের কর্মসূচির জন্যও আমরা উৎসাহী। তা পালন করা হবে।
বাড়ি থেকে পার্টির কাজ বা আপনার ব্যক্তিগত পেশার কাজ সামলাতে অসুবিধে হচ্ছে না ?
অগ্নিমিত্রা: না.. নাড্ডাজির নির্দেশ মতো এখনও কোনও সভা সমিতি তো হচ্ছে না। গত ৭ ধরেই পার্টির সভা সমিতি বন্ধ রয়েছে। আর আমার পেশাগত কাজ বলতে পারেন.. সামান্যই চলছে। বেসিক্যালি ছুটিই দিয়ে দিয়েছি সকলকে। আজ তো ছুটিই। তবে মাস্ক তৈরির কাজ চলছে আমার ওয়ার্কশপে। সেখানে মুখে মাস্ক বেঁধে কাপড়ের মাস্ক সেলাইয়ের কাজ চলছে । কারণ এমন পরিস্থিতিতে ওটা বন্ধ রাখা যায় না।সেগুলি হাসপাতালের অর্ডারের মাস্ক।
আপনি 'সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে ' কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন?
আমার গাড়ির চালক, বাড়িতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা আমার বিল্ডিং এর কোয়ার্টারেই থাকেন। তাঁরাও ফ্ল্যাটে এলে হাত ধুয়েই আসেন। তাঁদেরও বলা হয়েছে বিল্ডিং এর বাইরে না যেতে। আমরা তো নিজেরাও বাইরের জামকাপড় ডেটলে ধুয়ে রাখার ব্যবস্থা করছি।
আপনি তো মা.. মা হিসাবে আপনি কোন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলবনে বাকি মায়েদের?
অগ্নিমিত্রা:গোটা বিশ্বই এখন ত্রস্ত। সকলকেই সাবধানতা নিতে হবে। তবে এটা ভালো যে আমাদের গ্রীষ্মপ্রধান দেশ। শুনছি নাকি গরমে ভাইরাস বাঁচেনা। সেদিক থেকে আমরা ভাগ্যবান।সতর্কতা খুবই দরকার। অনেকেই শিক্ষিত হয়েও অশিক্ষিতের মতো আচরণ করছেন। এটা রুখতে হবে। মায়েদের অনেক বেশি সচেতন থাকতে তো হবেই!
মায়েদের সচেতনতার প্রসঙ্গই যখন উঠল , তখন একটা প্রশ্ন করি যে.. নবান্নের আমলা.. যাঁর সন্তান করোনা আক্রান্ত, তাঁর অবস্থান নিয়ে আপনি কী বলবেন?
অগ্নিমিত্রা:শিক্ষিত হলেই যে মানুষ শিক্ষিতের মতো আচরণ করেন না, তার প্রমাণই উঠে এলো...
আপনার কী মনে হয় যে রাজ্য সরকারের আরও বেশি কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল?
অগ্নিমিত্রা: অবশ্যই নেওয়া উচিত ছিল।.. সেই ছেলেটি যেভাবে সারা কলকাতা ঘুরে বেরিয়েছে.. সেটা ভাবা যায়না। দিদি বকাবকি করেছেন,.. এটা তো কোনও সমাধান নয়!..এখনও ১৪ দিন হয়নি, ছেলেটি যেখানে যেখানে ঘুরেছে, সেখানে কেউ আক্রান্ত হল কী না আমরা যানিনা.. গোটাটাই দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।
আপনারা ওই আমলার কোন শাস্তি দাবি করছেন?
অগ্নিমিত্রা:অন্তত ডিমোশন করা উচিত ছিল ওঁকে (আমলাকে)। ডিমোশন না করলেও সাসপেন্ড করা উচিত ছিল। অন্তত একমাস কী দু'মাসের জন্য সাসপেন্ড করা উচিত ছিল। অন্তত মানুষ দেখত যে অন্যায়ের শাস্তি হয়েছে। ওঁর স্বামী (আমলার) নিজে চিকিৎসক হয়েই বা কীভাবে এটা অ্যালাও করলেন? কতটা স্বার্থপর হলে মানুষ এমনটা করতে পারে! এর শাস্তি দরকার। দিদি প্রত্যেকবারের মতো এবারেও 'মাথা নত' করে দিলেন বাংলার।কোনও পদক্ষেপ নিলেন না!
মুখ্যমন্ত্রী যে পদক্ষেপ নিয়েছেন করোনা ইস্যুতে, তাকে অনেকেই সাধুবাদ জানাচ্ছেন। আপনি কী বলবেন?
অগ্নিমিত্রা: আমার খুব অবাক লাগছে ..যে করোনা ভাইরাসের এমন সাংঘাতিক পরিস্থিতি নিয়েও উনি রাজনীতি করেই যাচ্ছেন! কেন বলছি.. আপনারা জানেন কী না জানিনা.. আজকে উনি সমস্ত স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের ডেকে পাঠিয়েছেন 'মিড ডে' মিল নিয়ে আলোচনা করতে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে উনি মিটিং ডাকলেন.. মোদীজীকে ছোট করার জন্য,এবং যেভাবে তিনি নিজের আমলাকে বাঁচিয়েছেন সেই একই মনোভাব নিয়ে তিনি মোদীজির নির্দেশও অমান্য করছেন। আজ যে কোয়ারেন্টাইন করতে বলা হয়েছে তা বৈজ্ঞনিক পদ্ধতি মেনেই বলা হয়েছে। যাতে ১৪ ঘণ্টার কার্ফুতে ভাইরাসের চেনটা ভাঙে।
'শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিপদে ফেলছেন'..
অগ্নিমিত্রার বক্তব্য, 'যেখানে মানুষকে আজকে বাঁচানোর কথা, সেখানে তিনি এই শিক্ষক শিক্ষিকাদের ডেকে তাঁদের ও তাঁদের পরিবারকে বিপদে ফেলে দিলেন। যেখানে সমস্ত রাজনীতি পেরিয়ে একযোগে কাজ করার কথা সকলের, সেখানে তিনি এমন বৈঠক ডাকলেন। এই বৈঠক কী না ডাকলেই হত না?'
একটা অন্য প্রসঙ্গে আসি.. ব্যস্ততার বাইরে বাড়িতে সময় কীভাবে কাটছে?
অগ্নিমিত্রা:
স্ত্রী
,
মা
,
পুত্রবধূ
হিসাবে
কাজ
তো
থাকেই।
বাড়িতে
সমস্ত
দিকে
সব
কিছু
খাবার
মজুত
আছে
কী
না,
তা
দেখা।ছোট
ছেলের
আজ
স্কুল
ছুটি
,
তাকে
সময়
দেওয়া।
'ঠাকুমার
ঝুলি'
গল্পের
বই
নিয়ে
বসা..
ব্যাস!
দুই
ছেলেরও
আনন্দ
যে
মা
সারাদিন
কাছেই
রয়েছে!
তবে
সবাই
আমরা
খুবই
চিন্তিত
করোনা
পরিস্থিতি
নিয়ে।
কারণ
আমরা
ছেলেরা
ছোট।
আমার
শ্বশুরমশাই
বয়স্ক।
খুবই
উদ্বেগ
আমাদের
সকলের।