‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছি, দিদির বিরুদ্ধে নয়’! তাহলে ২০২১-এ জঙ্গলমহল কোনদিকে
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে এখন থেকেই পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। এই মিশনে সবার আগে জঙ্গলমহলের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে জোর দিয়েছে।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে এখন থেকেই পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। এই মিশনে সবার আগে জঙ্গলমহলের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে জোর দিয়েছে। তৃণমূলের বিশ্বাস জঙ্গলমহলের মানুষ ফিরে এসেছে তাদের দিকে। ২০১৯-এ যাই হোক, ২০২১-এ তারা ভোট দেবে তৃণমূল কংগ্রেসকেই। তার একমাত্র কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান তৃণমূলের
জঙ্গলমহলে পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তৃণমূল আবিষ্কার করেছে, জঙ্গলমহলে এই হারের পিছনে নেতাদের দুর্নীতিই দায়ী। রাজ্য সরকার বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের আওতায় আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করলেও তা বহুক্ষেত্রে মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। তা ব্যবহার করে পঞ্চায়েত নেতারা দরিদ্রদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছিলেন।
স্থানীয়দের বিরুদ্ধে ভোট, দিদির বিরুদ্ধে নয়
আদিবাসী মানুষেরাই এখন বলছেন, লোকসভা নির্বাচনে আমরা স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছি, দিদির বিরুদ্ধে নয়। পঞ্চায়েত নেতারা এখন তাদের অপকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন এবং দরিদ্রদের কাছে অর্থ ফেরত দিচ্ছেন। আমরা কখনই ভাবিনি যে এ জাতীয় ঘটনা ঘটতে পারে। এবার আমরা তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হতাশ করব না।
দুর্নীতিপরায়ন হয়ে মাশুল দিয়েছিল তৃণমূল
তাঁদের এই স্বীকারোক্তিতেই পরিষ্কার, দুর্নীতিপরায়ন মনোভাবের মাশুল দিতে হয়েছে তৃণমূলকে। শাসকদলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন আদিবাসী এবং কুর্মিরা। ওই অংশে ৬৩ শতাংশের বেশি ভোটার আদিবাসী-কুর্মি সম্প্রদায়ের। তাদের অধিকাংশ ভোটই বিজেপির পক্ষে গিয়েছিল। তৃণমূল ভুলের ফাঁদে জড়িয়ে সরে গিয়েছে জঙ্গলমহলের মানুষের কাছ থেকে।
দুর্নীতিগ্রস্থদের শনাক্ত করেছে তৃণমূল
এমতাবস্থায় ঝাড়গ্রামের মানুষের মনে ফের জায়গা করে নিতে এবার নতুন করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল। দলের প্রতি মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে দুর্নীতিগ্রস্থ নেতাদের শনাক্তকরণ করেছে তৃণমূল এবং তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। লালগড়ের তৃণমূল ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো বলেন, আমরা উন্নয়নে জোর দিয়েছি। উন্নয়ন দিয়েই আমরা আবার কামব্যাক করব।
দিদি আদিবাসীদের জন্য মা হয়ে উঠেছিলেন
রাজ্য সরকার বিদ্যালয়, সেতু, আইটিআই ইনস্টিটিউট, নতুন রাস্তা, দরিদ্রদের জন্য ঘর নির্মাণ এবং পানীয় জলের প্রকল্প তৈরি করছে। প্রবীণ, আদিবাসী এবং বিধবাদের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আদিবাসীদের কাছে এমন ধারণা বলবৎ ছিল যে, দিদি আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তা তা ভোলেননি বলেই, আবার তৃণমূলের পক্ষেভোট দেওয়ার বার্তা দিচ্ছেন জঙ্গলমহলের মানুষ।
বিজেপিতে ছেড়ে তৃণমূলে ফিরছেন অনেকে
ঝাড়গ্রাম থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জেলা সভাপতি বীরবাহ সোরেনের কথায, ২০১৯ সালের নির্বাচনে আমাদের হার হয়েছিল ঠিকই, এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। যাঁরা বিজেপিতে স্থানান্তরিত হয়েছেন তাঁরা তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। ফলে আবার তৃণমূল জঙ্গলমহলে স্বমহিমায় ফিরবে। নেতারাও ভুল স্বীকার করেছেন।
জঙ্গলমহলে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল তৃণমূল
বিগত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে প্রায় হোয়াইটওয়াশ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তরণ হয়েছিল বিজেপির। জঙ্গলমহলে সব আসনেই জয়ী হয়েছিল গেরুয়া শিবির। বিজেপি ওই আসনগুলিতে প্রবল প্রতাপ নিয়ে জিতেছিল। তৃণমূল ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর জেলায় নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি হারিয়ে ফেলেছিল।