অলীক চক্রবর্তীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে উত্তাল ভাঙড়, মহামিছিল জমিরক্ষা কমিটির
জমি-জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সদস্যরা বিশাল মিছিল করে বুঝিয়ে দিলেন একজন নেতাকে গ্রেফতার করলেই তাঁদের আন্দোলন থেমে যাবে না।
ভাঙড় আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই জ্বলছে এলাকার পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন গ্রামগুলি। বৃহস্পতিবার রাতে মশাল মিশিলের পর শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। এরপর বিকেলে জমি-জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সদস্যরা বিশাল মিছিল করে বুঝিয়ে দিলেন একজন নেতাকে গ্রেফতার করলেই তাঁদের আন্দোলন থেমে যাবে না।
এদিন সকাল থেকে পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন এলাকার সব রাস্তায় অবরোধ করা হয়। নতুনহাট, খামারআইট, পদ্মপুকুর, বকডোবায় রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি চলে। তারপর বিকেলে মাটিডাঙা থেকে একটি মহামিছিল বের হয়। এই মিছিলে পুরভাগে অংশ নেন সমীর পুততুণ্ডু, ভারতী মুৎসুদ্দি, শতরূপ ঘোষ-সহ সেভ ডেমোক্রেসি ও জমি-জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সদস্যরা।
এই মিছিল থেকে আন্দোলনকারীরা দাবি তোলেন, বৃহস্পতিবার ভুবনেশ্বর থেকে সিপিআইএমএল রেডস্টারের নেতা অলীক চক্রবর্তীকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা বেআইনি। অলীক চক্রবর্তী অসুস্থ, তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। যতক্ষণ না মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ এই অবরোধ চলবে।
এদিন আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালীন বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে হাড়োয়া-লাউহাটি রোডের বিভিন্ন জায়গায় যেমন গাছের গুঁড়ি ফেলে, বাঁশ দিয়ে গেট তৈরি করে, ইট জড়ো করে অবরোধ চলছে, আগামী দিনেও চলবে। ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীরা এই মিছিলে সামিল হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। মিছিলে স্লোগান ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের জমি দেওয়াকে কেন্দ্র করে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। পাওয়ার গ্রিডের জন্য জমি দিতে নারাজ এলাকাবাসীদের একাংশকে নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন সিপিআইএমএল রেডস্টারের নেতা অলীক চক্রবর্তী। আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে, আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে রক্তও ঝরে এলাকায়।
তারপর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও জমি-জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি প্রার্থী দেয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচটি আসনে জয়লাভও করে। সেই রোষ থেকেই অলীক চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
এদিক শাসকদলের অভিযোগ, এই আন্দোলনে মাওবাদী-যোগ রয়েছে। কয়েকটি চরমপন্থী সংগঠন এই আন্দোলনে ঢুকে পড়েছে। তার জেরেই ভাঙড়ের মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। সেই ভুল বোঝানোর পালা এখনও চলছে। এবং সমানে এলাকা উত্তপ্ত করতে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। পাওয়ার গ্রিড হলে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপকৃত হবেন, সেই সার সত্য বুঝছে না।