বামেদের জেল ভরো আন্দোলন, জেলায় জেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
বামপন্থী সংগঠনের 'জেল ভেরো' আন্দোলনে অশান্তি হল পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে। সব জায়গাতেই বামপন্থীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে।
বৃহস্পতিবার সারা দেশ জুড়ে কৃষকদের বেশ কয়েক দফা দাবিতে বামপন্থী কৃষক-শ্রমিক-ক্ষেতমজুর সংগঠনগুলি 'জেল ভরো' কর্মসূচী নিয়েছিল। কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তাতে ব্যপক সাড়া মিলল। জেলায় জেলায় ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বাম-কর্মীরা।
শ্রমিকের মাসিক ন্যূনতম ৩০০০ টাকা পেনশন, কৃষকদের সামাজিক সুরক্ষা, পেট্রল-ডিজেল-কেরোসিন-রান্নার গ্যাসের মূল্য কমানো, ১০০ দিনের কাজের বদলে ২০০ দিনের কাজ, কৃষকদের আত্মহত্যার প্রতিবাদ সহ বারো দফা দাবিতে এদিন দেশের ৪০০টি জেলায় জেল ভরো কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বাম সংগঠনগুলি।
এদিন বেলা ১টা থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয় বামেদের মিছিল। কলকাতায় মিছিল শুরু হয় এসএন ব্যানার্জি রোড থেকে। সেখান থেকে মিছিল আসে রানী রাসমনি রোডে। ছিলেন বাম নেতা, বিমান বসু, মানব মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। সেখানে পুলিশ ব্যারিকেড করে রেখেছিল। সেই ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বাম-কর্মীদের। বাম ছাত্র সংগঠন এসএফ আইয়ের কয়েকজন কর্মী পুলিশকে এড়িয়ে গিয়ে রাজভবনের গেটে লাল ঝান্ডা টাঙিয়ে দেন। ঘটনায় ১৯ জন এসএফআই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে অশান্তি হয় কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুরেও। জেলার প্রায় ৫ হাজার কর্মী এসে জড়ো হন মেদিনীপুর শহরে। ত্রিস্তরীয় পুলিশি বাধা ভেঙে তাঁরা ঢুকে পড়েন জেলা শাসকের দফতরেও। সেই নিয়ে ধুন্ধুমার বেধে যায় মেদিনীপুর শহরে।
বিক্ষোভ প্রদর্শন হয় দুই চব্বিশ পরগণাতেও। বারাসাতের বিভিন্ন এলাকা থেকে বামকর্মীরা জড়ে হন চাঁপাডালি মোড়ে। সেখানে প্রায় ১ ঘন্টা পথ অবরোধ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন তড়িৎ তোপদার, রেখা গোস্বামী, রমলা চক্রবর্তী, নেপালদেব ভট্টাচার্য প্রমুখ। এই অবরোধে যানজটের সৃষ্টি হয় যশোর রোডে।
ফলতা-ডায়মন্ড হারবার সীমান্তে আবার মিছিলের উপর বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর গাড়ি লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সুজন বাবু জানিয়েছেন ২-৩টি গাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়েছে।
কোচবিহার, মালদহ, রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি সব জেলাতেই পুলিশের সঙ্গে বামকর্মীদের সংঘর্ষের একই ছবি দেখা গিয়েছে। গোটা রাজ্যেই বহু বামকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।