হাল্কা উপসর্গ সহ নতুন করোনা রোগীদের জন্য রাজ্যে তৈরি হচ্ছে আইসোলেশন সুবিধা
হাল্কা উপসর্গ সহ নতুন করোনা রোগীদের জন্য রাজ্যে তৈরি হচ্ছে আইসোলেশন সুবিধা
লকডাউনের নিয়ম শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যে কারণে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে উপসর্গ বিহীন ও হাল্কা উপসর্গ রয়েছে এমন নতুন করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশনের সুবিধাযুক্ত জায়গা তৈরি করবে।
আইসোলেশন সুবিধা গড়বে সরকার
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই কলকাতা ও গ্রাম সহ রাজ্যের অন্যান্য অংশে এ ধরনের সুবিধা তৈরি করার জন্য আলোচনা করেছে। রাজ্য সরকারের মনে হয়েছে যে অনেক রোগীরই হাল্কা উপসর্গ থাকে, যার জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নাও হতে পারে। তাঁদের এইসব আইসোলেশন কেন্দ্রে রাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা নিরাপদ নাও হতে পারে বড় সংখ্যার রোগীদের কারণ তাঁরা সেখানে সব সুবিধা পাবেন না এবং সংক্রমণও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
লকডাউনের পরই রাজ্যে বাড়বে কোভিড–১৯
মঙ্গলবার রাজ্যে ৩৭২টি নিশ্চিত কোভিড-১৯ পজিটিভ কেসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ৯ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত বাংলায় করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৮,৯৮৫টি। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, বাংলায় কোভিড-১৯ বেড ছিল ৮,৭৮৫টি, ৯ জুনের মধ্যে ২৩ শতাংশ বেড ভর্তি হয়ে যায়। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘কিন্তু লকডাউনের নিয়ম উঠে যাওয়ার পরই সম্ভাবনা রয়েছে নতুন কেস রোজ ১০০০ করে বেড়ে যাওয়ার। আমাদের আগে থেকে এ নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। যদি আরও বেড কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ছাড়তে হয় তবে অন্যান্য রোগের রেগীরা সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।' স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রাক-উপসর্গমূলক কোভিড রোগী বা যাঁদের হাল্কা উপসর্গ রয়েছে তাঁরা বাড়িতেই আইসোলেশনের সুবিধায় থাকতে পারবে কিন্তু তাঁদের ত্রি-স্তর মাস্ক পরতে হবে, বাড়িতে একটা ঘরের মধ্যে অন্যদের থেকে দূরে থাকতে হবে বিশেষ করে বয়স্কদের কাছ থেকে এবং নিজের ব্যক্তিগত জিনিস কারোর সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না। এ ধরনের কিছু নির্দেশ অনুসরণ করতে হবে।
বহু জায়গাতেই সামাজিক দুরত্বের বিধি লঙ্ঘন
সামাজিক দুরত্বের বিধি বস্তি ও বহু গ্রামেই অনুসরণ করা হচ্ছে না সঠিকভাবে। বাংলায় বহু মানুষই একই ঘরে অনেকে মিলে থাকছেন এবং একটাই শৌচালয় ব্যবহার করছেন। এমনটাই জানিয়েছে সরকার ও সরকারি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা ও বাংলার অন্যান্য শহরে ছোট ছোট অ্যাপার্টমেন্টগুলিতে আইসোলেশন বজায় রাখা খুবই সমস্যার। অনেক পরিবারই তাঁদের বয়স্ক অভিভাবক ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে থাকেন।
সরকারি স্কুল বা কমিউনিটি সেন্টারে গড়া হবে এই সুবিধা
সরকারি স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলিকে হাল্কা উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের আইসোলেশন কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সরকারি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অভিজিত চৌধুরি বলেন, ‘অধিকাংশ কোভিড-১৯ রোগী সুস্থ হয়ে গিয়েছে। তাই যে সব রোগীদের ক্রিটিকাল কেয়ার সাপোর্টের প্রয়োজন নেই তাঁদের হাসপাতালে এনে অতিরিক্ত বোঝা চাপানোর অর্থ নেই। তাই যে সব রোগীর হাল্কা উপসর্গ বা উপসর্গ নেই তাঁদের আইসোলেটেড সুবিধা রয়েছে এমন কমিউটি হলে বা অন্য কোনও স্থানে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য কর্মীদের পর্যবেক্ষণে রাখা যেতেই পারে।' তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীদের যে কোনও ব্যক্তির মধ্যে গুরুতর লক্ষণ সনাক্ত করার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত এবং তারপরে তাদের হাসপাতালে নিয়োগ করা উচিত। এটি একটি প্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়াশীল মানব অংশগ্রহণমূলক পরিচালন প্রোটোকল সরবরাহ করবে এবং এখন সমাজে প্রচলিত ভয় এবং কলঙ্ক দূর করার চেষ্টা করবে।'
বেসরকারি হাসপাতাল কোভিড–১৯ বেড বৃদ্ধি করতে চাইছে না
এর আগে কলকাতা পুরসভা শহরে কোয়ারেন্টাইন সুবিধা গড়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তা হয়নি বাসিন্দাদের বিরোধিতার ফলে। সরকারি এক আধিকারিক বলেন, ‘কিন্তু এখন, প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ সঙ্কটের মাত্রা বুঝতে পেরেছে। সুতরাং, আশা করা যায় যে এ জাতীয় প্রতিরোধ আগের মতো শক্তিশালী হবে না।' এ ধরনের আইসোলেশন প্রতিষ্ঠান গনার আরো একটি উদ্দেশ্য হল শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলি কোভিড-১৯ বেডে বাড়াতে অনিহা প্রকাশ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে হাসপাতালগুলিকে বেড বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল।
উপসর্গহীন রোগীদের মাধ্যমে সংক্রমণের বিষয়ে ভ্রান্তি দূর করতে আবার মাঠে নামল হু