নদিয়ায় যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের
নদিয়ার বাসিন্দা কৌশিক কর্মকারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের রিপোর্টে খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিল হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালতের আরও নির্দেশ, সেদিন রাজ্যকে তদন্ত কমিটির জন্য তিন প্রতিনিধির নাম প্রস্তাবের করতে হবে আদালতে। পাশাপাশি, সেদিন রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ও নদিয়ার এসপিকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
সোমবার মামলাকারীর আইনজীবী অচ্যুৎ বসুরা জানান, '২০১৫ র ১০ ফেব্রুয়ারি নদীয়ার বাসিন্দা কৌশিক কর্মকারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে নদিয়া থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তে ও পুলিশের রিপোর্টে ওই যুবক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। রাজ্যের কৌঁসুলি আদালতে জানান, 'সেদিন রাতে গাড়ি সারাতে কৌশিক বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তার গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। এবং মৃত্যু কালীন সময়ে সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল।'
তবে কৌশিকের মা শ্যামলী কর্মকারের দাবি তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, কৌশিক এক জন ডিভোর্সী মেয়েকে বিয়ে করে। তাঁর ছেলের মৃত্যুর এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁর বউমা রিয়া কর্মকার আত্মহত্যা করে মারা যান। সুইসাইড নোটে তার বৌমা জানিয়েছিলেন। এই মৃত্যুর পিছনে তার আগের স্বামীর হাত রয়েছে। সে তাদেরকে সুখে থাকতে দেবে না বলে হুমকিও দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তদন্তে এসব কিছুই করেনি।'
তাই পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। হাইকোর্টেও রাজ্যের তরফে দাবি করা হয় গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কৌশিকের। হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চও রাজ্যের পক্ষে রায় দেন।
আইনজীবীরা আরও জানান, এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন কৌশিকের মা। ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানিতে পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলে ডিভিশন বেঞ্চ। যে গাড়ি দুর্ঘটনায় কৌশিক মারা যায়। সেই গাড়ি বাজায়াপ্ত করেনি পুলিশ। পাশাপাশি, কৌশিকের ফোন নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করেনি পুলিশ এবং পুলিশে রিপোর্টে কেন কৌশিক মদ্যপ অবস্থায় মারা গিয়েছিল তা উল্লেখ নেই তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা ডিভিশন বেঞ্চ। এবং কৌশিকের স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় এখানে নেই কেনো তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত।