৫৪ আসনের উপনির্বাচনে বিজেপির লড়াই সরকার বাঁচানোর, একনজরে কোথায় কত ভোট
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বের ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ ছাড়াও দশটি রাজ্যের ৫৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণও হল একইদিনে। ভারতে গণতন্ত্রের উৎসবের এই ব্যস্ত দিনে উপনির্বাচনে ব্যাপক সাড়া পড়ল মঙ্গলবার। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মধ্যপ্রদেশের ২৮ আসনের উপনির্বাচন। এছাড়া গুজরাট-কর্ণাটকেও উপনির্বাচনের দিকে নজর ছিল এদিন।

গুজরাট থেকে হরিয়ানা, কর্ণাটক থেকে মধ্যপ্রদেশে-সহ বেশ কয়েকটি জায়গার নির্বাচনে বিজেপি তার সরকারকে বাঁচাতে কংগ্রেসের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে এদিন। করোনার আবহে সমস্তরকম সুরক্ষা বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব নিবজায় রেখে ভোটগ্রহণ করা হয়। ছিল মুখোশ, স্যানিটাইজার, গ্লোভস-সহ সমস্তরকম সুরক্ষা ব্যবস্থা।
সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছিল এবং ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড এবং নাগাল্যান্ড বাদে সর্বত্র সন্ধ্যা ৬টা অবধি চলে ভোট। সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন রাজ্যে প্রদত্ত ভোটের শতাংশ ঘোষণা করে। বিভিন্ন রাজ্য কত শতাংশ ভোট পড়েছে, তার বিবরণ দেওয়া হল নিচে।
উত্তরপ্রদেশ
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভায় সাতটি বিধানসভা আসনে ৫১.৫৭ শতাংশ ভোট পড়ে। এই সাতটি বিধানসভা আসনের মধ্যে নওগাঁও সাদাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত মন্ত্রী চেতন চৌহানের মৃত্যুতে খালি পড়েছিল। বিজেপি তাঁর স্ত্রী সংগীতা চৌহানকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে। অন্য উল্লেখযোগ্য আসনটি হল বাঙ্গরমাউ (উন্নাও), যা ধর্ষণ মামলায় কুলদীপ সিং সেঙ্গার দোষীসাব্যস্ত হওয়ার পরে শূন্য হয়ে যায়।
হরিয়ানা
হরিয়ানায় ১.৮ লক্ষ ভোটার কুস্তিগীর বিজেপি প্রার্থী যোগেশ্বর দত্ত-সহ ১৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করে। কংগ্রেসের তিনবারের বিধায়ক শ্রীকৃষ্ণ হুদার মৃত্যুতে বরোদা আসন শূন্য হয়। এ রাজ্যে ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
মধ্যপ্রদেশ
মধ্যপ্রদেশের দিকেই সর্বাপেক্ষা দৃষ্টি ছিল এবার উপনির্বাচনে। ২২৯ আসনবিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশে শাসক দল বিজেপির ১০৭ জন বিধায়ক রয়েছে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য কমপক্ষে আরও আটজন বিধায়ক প্রয়োজন তাদের। ২৮টি আসনের মধ্যে ২৭টি আসন কংগ্রেসের দখলে ছিল। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিদ্রোহের পরে কমলনাথ সরকার ভেঙে যাওয়ার পরে পঁচিশ জন এই বছরের গোড়ার দিকে পদত্যাগ করেছিলেন এবং বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
কংগ্রেস ছেড়ে আসা প্রার্থীরাই বিজেপি টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য তিনটি আসনে উপ-নির্বাচন অপরিহার্য ছিল সিটিং বিধায়কদের মৃত্যুর পরে। মধ্যপ্রদেশে উপনির্বাচনে ৬৬.৩৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।
গুজরাত
গত জুনে রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস বিধায়করা পদত্যাগ করার পরে গুজরাটে আটটি আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে পাঁচজন পরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ রাজ্যে ৫৭.৯৮ শতাংশের ভোটগ্রহণ নিবন্ধিত হয়েছে।
কর্ণাটক
কর্ণাটক বেঙ্গালুরু আরবান জেলার রাজরাজেশ্বরী নগর এবং তুমাকুরু জেলার সিরাতে ভোট হল এদিন। এখানে মোট ৩১ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। জেডিএসের বিধায়ক বি সত্যনারায়ণের মৃত্যু এবং আরআর নগর কংগ্রেসের বিধায়ক মুনিরথনার গত বছর বিধানসভা থেকে পদত্যাগের ফলে উপ-নির্বাচন হল
কংগ্রেস রাজ্য সভাপতি ডি কে শিবকুমারের ভাই ডি কে সুরেশের বেঙ্গালুরু পল্লি লোকসভা কেন্দ্রের আরআর নগর আসনটি কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়েরই জন্য মর্যাদাপূর্ণ বিষয়। আরআর নগরে ৫১.৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ছত্তিশগড়
ছত্তিশগড়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং জেসিসি (জে) বিধায়ক অজিত যোগীর মৃত্যুর ফলে মারওয়াহি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হল। এখানে ৭১.৯৯ শতাংশ ভোট পড়ে।
তেলঙ্গানা
তেলেঙ্গানা রাজ্যের দুব্বক বিধানসভা কেন্দ্রের ২০ জনেরও বেশি প্রার্থী ভোট ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে মূল প্রতিযোগিতা টিআরএস, বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে। চলতি বছরের আগস্টে স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে অধিষ্ঠিত টিআরএস বিধায়ক সলিপেতা রামলিংদা রেড্ডির মৃত্যুর ফলে উপনির্বাচন হয়। টিআরএস তার বিধবা সলিপেতা সুজাতাকে প্রার্থী করেছে। বিতর্কিত দুব্বক উপনির্বাচনে ৮১.৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ঝাড়খন্ড
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গড় ডুমকায় তাঁর ছোট ভাই বসন্ত সোরেন এবং বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী লুইস মারান্দির মধ্যে লড়াই হচ্ছে। বোকারো জেলার বার্মো আসনে বিজেপির যোগেশ্বর মাহাতো এবং কংগ্রেসের অনুপ সিংয়ের মধ্যে সরাসরি লড়াই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুটি আসনে ভোট পড়েছে ৬২.৫১ শতাংশ।
ওডিশা
ওড়িশায় বিজেডি এবং বিজেপি ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যথাক্রমে তির্তল এবং বালাসোরের আসনের জন্য লড়াই করছে। উভয় আসনে ৬৮.০৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
নাগাল্যান্ড
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যে আট জন প্রার্থী দুটি বিধানসভা আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দক্ষিণ অঙ্গামি-১ আসন থেকে তিনজন এবং পুংরো-কিফায়ার আসন থেকে পাঁচজন। গত ডিসেম্বরে বিধানসভার স্পিকার ভিখো-ও যোশুর মৃত্যুর পরে দক্ষিণ অঙ্গমি -১ আসনটি শূন্য হয়ে যায়। বিরোধী নাগা পিপলস ফ্রন্টের বিধায়ক টি তোরেচুর মৃত্যুর পরে পুংগ্রো-কিফায়ার আসনটি শূন্য হয়