লালকেল্লা থেকে নাম না করে মমতাকে নিশানা মোদীর
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে লালকেল্লা থেকে ভাষণ প্রধানমন্ত্রী। ভাষণের মাধ্যমেই একাধিক বার্তা। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, নোট বাতিল-জিএসটি-দুর্নীতি নিয়ে সরকারের পথ চলার বার্তা। টার্গেটে পশ্চিমবঙ্গ
৭১ তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে ভাষণ হলেও, তাতে রাজনীতি থাকেই। তা সরাসরি না হলেও পরোক্ষে তো বটেই। ভাষণে একাধিক বিষয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কি পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতৃত্বকে কোনও বার্তা দিতে চাইলেন, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাই বা কী বলছেন, একবার দেখে নেওয়া যাক:
১) ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তাই কেন্দ্র-রাজ্যের সম্পর্ক ভাল করেই বোঝেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য এখন সব সিদ্ধান্ত একসঙ্গে নিচ্ছে। এই কথার মধ্যে দিয়ে কি পশ্চিমবঙ্গ সহ যে রাজ্যগুলি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ তুলছে, তাদের কি কোনও বার্তা দিতে চাইলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই।
২) লালকেল্লা থেকে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং জিএসটি নিয়ে সরকারের পক্ষ ফের একবার জোর দিয়ে প্রকাশ করেছেন। এই দুটি বিষয়ে প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নোট বাতিলের ফলে অনেক দুর্নীতি সামনে এসেছে। ৩ লক্ষ ভুয়ো সংস্থার হদিশ মিলেছে, যার মধ্যে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার সংস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর জিএসটির মাধ্যমে কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছ্বতা এসেছে। সংবাদ মাধ্যমেরই খবর যে, ভুয়ো সংস্থাগুলির অনেকগুলিই ঠিকানা এই পশ্চিমবঙ্গের। দুর্নীতির কথা তুলে সারদা, নারদায় বিধ্বস্ত তৃণমূলকে কি কোনও বার্তা দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রশ্ন কিন্তু তুলছেন রাজনীতির কারবারিরা।
৩) প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বিহার, বাংলা এবং অসম। এই ৩ রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ তো ঝাড়খণ্ড কিংবা ছত্তিসগড়ও। সেই দুই রাজ্যের কথা এলো না কেন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। নাকি এই কথার পিছনেও লুকিয়ে আছে অন্য় উদ্দেশ্য। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঝাড়খণ্ড কিংবা ছত্তিসগড়ে ক্ষমতার স্বাদ বিজেপি অনেক আগেই পেয়েছে। আর এই বছরেই বিজেপি এককভাবে ক্ষমতায় এসেছে অসমে। আর অতি সম্প্রতি নীতীশ কুমারের সাহায্যে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় এসেছে বিহারে। কিন্তু বাকি থেকে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সেই পশ্চিমবঙ্গকে টার্গেট করেই কি নতুন উদ্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি? তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ইতিমধ্যেই হুমকি দিয়েছেন পুজোর আগেই ভাঙছে তৃণমূল। এই ধরনের হুমকি দিলীপ ঘোষসহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনেকেই আগেই দিয়েছিলেন। কিন্তু তার কোনও প্রভাব সামনে থেকে তৃণমূলের ওপর পড়েছে বলে দেখা যায়নি। এখন অপেক্ষার, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোন উপায়ে তৃণমূলকে কাবু করে, কিংবা আদৌ কাবু করতে পারে কিনা তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।