মমতার লড়াই কোথায় কঠিন, ভবানীপুর ও নন্দীগ্রামের পরিসংখ্যানে নজর একুশের আবহে
বিজেপি বলছে ভবানীপুরে লড়াই কঠিন হতে চলেছে বলেই নন্দীগ্রামকে বেছে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পর মমতা প্রথম নন্দীগ্রাম সফরে গিয়েই চমক দিয়েছেন নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করে। তারপরই বিতর্ক শুরু হয়েছে মমতা কেন নন্দীগ্রামে? একনজরে দেখে নেওয়া যাক, ভবানিপুর না নন্দীগ্রাম কোথায় লড়াই কঠিন মমতার।

প্রেস্টিজ ফাইটে মমতা ভবানীপুরে, নন্দীগ্রামেও
২০১৬ সাল থেকে ২০১৯-এ অনেক শক্তিশালী হয়েছে বিজেপি। তার প্রমাণ স্বরূর ২ থেকে বেড়ে বিজেপি ১৮ সাংসদ পেয়েছে। সেই উত্থানকে ঘিরেই বিজেপির স্বপ্ন দেখা শুরু। তারপর তৃণমূলে এসেছে একের পর এক ভাঙন। এই অবস্থায় ভোট হতে চলেছে ২০২১-এর। এই লড়াই তৃণমূলের কাছে প্রেস্টিজের। প্রেস্টিজ ফাইটে মমতা এবার ভবানীপুরের সঙ্গে লড়বেন নন্দীগ্রামেও।

ভবানীপুরে ২০১৬ বিধানসভায় কে কত
ভবানীপুরে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৪৭.৬৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির প্রার্থী চন্দ্রকুমার বসু পেয়েছিলেন মাত্র ১৯.১৩ শতাংশ ভোট। সেবার মমতার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বাম-কংগ্রেস জোট। বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি পেয়েছিলেন ২৯.২৬ শতাংশ ভোট।

২০১৯ সালে এই ছবিটা আমূল বদলে গিয়েছিল
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ভবানীপুর বিধানসভা বিজেপির ভোট প্রাপ্তির হার ছিল প্রায় তৃণমূলের সমান। তৃণমূল যেখানে পেয়েছিল ৪৫.৫২ শতাংশ, সেখানে বিজেপির ভোট ছিল ৪৩.১৬ শতাংশ। সেই নিরিখে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বিজেপি টাফ ফাইট দেওয়ার মতো জায়গায় চলে এসেছে, বলাই যায়।

নন্দীগ্রামে ২০১৬-র নির্বাচনে শুভেন্দুর জয়
আর নন্দীগ্রামে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী পেয়েছিলেন ৬৭.০২ শতাংশ ভোট। আর বিজেপি সেখানে মাত্র ৫.৪০ শতাংশ ভোটে পেয়েছিল। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর সঙ্গে। সিপিআই প্রার্থী পেয়েছিলেন ২৬.৭০ শতাংশ ভোট।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বৃদ্ধি
আর ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে বিজেপির ভোটবৃদ্ধির হার ছিল যথেষ্টই। লোকসভা ভোটের নিরিখে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় তৃণমূল পেয়েছিল ৬৩.১৪ শতাংশ ভোট। আর বিজেপি ভোট প্রাপ্তি বেড়ে হয়েছিল ৩০.০৯ শতাংশ। তৃণমূল সেফ জোনেই রয়েছে নন্দীগ্রামে।

মমতা কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে শুভেন্দুর ডেরায়
এরপর অবশ্য নন্দীগ্রামে শুভেন্দুপন্থীরা তৃণমূল থেকে মাইনাস হয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে এখানেও বিজেপি তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। মোট কথা, খুব সহজ আসন থাকবে না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে শুভেন্দুর ডেরায়।

নন্দীগ্রামে মমতার বড় ভরসা সংখ্যালঘু ভোট
নন্দীগ্রামে সংখ্যালঘু ২৩ শতাংশ। আর ৭৭ শতাংশ হিন্দু। সেক্ষেত্রে ২৩ শতাংশের অধিকাংশের সমর্থন পাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার বড় ভরসা এই সংখ্যালঘু ভোট। কারণ আর হিন্দু ভোটের বাকি ৪০ শতাংশ অন্তত তৃণমূলের ভোটবাক্সে এসেছিল। সেই ভোটের কত অংশ শুভেন্দুর সঙ্গে যায়, তার উপর নির্ভর করবে নন্দীগ্রামে মমতার ভাগ্য।

অবাঙালি ভোট ফ্যাক্টর মমতার ভবানীপুরে
আর ভবানীপুরে বিপুল সংখ্যাক অবাঙালি ভোট রয়েছে। এই অবাঙালি ভোট লোকসভায় অনেকটাই টার্ন নিয়েছে বিজেপির দিকে। তৃণমূলকে এখানেও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে। তবে একটাই সহায় প্রার্থীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে এই হিসেব পুরোপুরি খাটবে না। নন্দীগ্রামের ক্ষেত্রেও মমতা ফ্যাক্টর তো একটা থাকবেই।
'ভোটে ১৬ টা মেশিন গুনতে দেয়নি, চুরি করে জিতেছে', হুগলিতেও ফের তৃণমূলকে নিশানা শুভেন্দুর