পশ্চিম মেদিনীপুর: ১৫ জুন বাম, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দলে দলে
এই স্লোগান এক সময় দিত বামেরা, পরে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুরের সেই শক্ত মাটি ফাটিয়ে বাড়তে চলেছে পদ্মফুল! আগামী ১৫ জুন বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের অন্তত কয়েকশো নেতা-কর্মী বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন। ওই দিন দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহার উপস্থিতিতে তাঁরা গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন।
যে হেভিওয়েটরা দল বদল করতে চলেছেন, তাঁরা হলেন সুকুমার ভুঁইঞা, অশোক সেনাপতি, গৌড় ঘোড়ই প্রমুখ। সুকুমারবাবু কিছুদিন আগেও ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি ছিলেন। আর অশোকবাবু এখনও সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র জেলা কমিটির সদস্য। গৌরবাবু পশ্চিম মেদিনীপুরের কংগ্রেসের পরিচিত মুখ। দল বদল যে হচ্ছে, তা স্বীকার করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিজেপি সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, "মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনে বীতশ্রদ্ধ। তারা চায় নির্ভরযোগ্য কাউকে। আর সেই নির্ভরযোগ্য শক্তি হল বিজেপি। রোজই প্রচুর ফোন পাচ্ছি অন্যান্য দলগুলির কর্মীদের থেকে। তবে চোখ বুজে সবাইকে দলে শামিল করলে তো চলবে না! সব দিক থেকে খোঁজখবর নিতে হবে, তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে হবে। তাই একটু সময় লেগে যাচ্ছে।"
তিনি যে বিজেপি-তে যাচ্ছেন, সে কথা ঘোষণা করেছে অশোক সেনাপতি। তিনি বলেন, "পার্টির অবস্থা খুব খারাপ। বামফ্রন্ট নেতারা এখন শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারছেন। মার খাওয়ার ভয়ে রাস্তায় পর্যন্ত নামছেন না। অথচ তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার একটার পর একটা অন্যায় করে চলেছে। বিজেপি-ই পারবে এদের রুখতে। তাই আমি বিজেপি-তে গিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে।"
কংগ্রেস নেতা গৌড় ঘোড়ই বলেন, "কিছুদিন আগেই বিজেপি-তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আগামী দিনে রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি হবে বিজেপি-ই। কংগ্রেসের কোনও ভবিষ্যৎই নেই পশ্চিমবাংলায়।"
ইতিমধ্যে জেলা রাজনীতির অনেক পরিচিত মুখই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের নয়াগ্রাম ব্লক সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দু পাত্র। এ ছাড়াও পিংলার জামনা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্যা সালমা বিবি নাম লিখিয়েছেন বিজেপি-তে।
বলা ভালো, পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপি-র অস্তিত্ব ছিল না লোকসভা ভোটের আগেও। কিন্তু ভোটের ফল বেরোতে দেখা গেল গোটা জেলায় তারা ১৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে। কয়েকটি বিধানসভা আসনে সিপিএমকে পিছনে ফেলে তারা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এর জেরে বেজায় উল্লসিত বিজেপি নেতারা নতুন উদ্যমে সংগঠন তৈরি করতে নেমে পড়েন। এখন গ্রামে গ্রামে সংগঠন তৈরির কাজে মন দিয়েছে তারা। যে ব্লকগুলিতে বিজেপি-র পার্টি অফিস নেই, সেখানে তা বানাতে টাকার সংস্থানও করে ফেলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।