দুর্গাপুজোয় চাঙ্গা বাংলার অর্থনীতি, ৪০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন ও ৩ লক্ষ কর্মসংস্থান
বাংলার বড় উৎসব দুর্গাপুজোয় ৪০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আর দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে হয়েছে ৩ লক্ষ কর্মসংস্থান। সম্প্রতি ব্রিটিশ কাউন্সিল একটি সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
দুর্গাপুজোয় চাঙ্গা হয়ে উঠল বাংলার অর্থনীতি। বাংলার বড় উৎসব দুর্গাপুজোয় ৪০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আর দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে হয়েছে ৩ লক্ষ কর্মসংস্থান। সম্প্রতি ব্রিটিশ কাউন্সিল একটি সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে ২০১৯ সালের দুর্গাপুজো পর্যালোচনা করে বাংলার অর্থনীতির উৎকৃষ্ট ছবি উঠে এসেছে।
৪০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন, তিন লক্ষ কর্মসংস্থান
দুর্গাপুজোয় এই অর্থীনীতি রাজ্যের জিডিপির ২.৫৮ শতাংশ। এই সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলার দুর্গাপুজো আনন্দ-উল্লাসের নয়, এই দুর্গাপুজোয় বিশাল অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ হয়। ৪০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয় একটা উৎসবে, তা কি মুখের কথা। একটা উৎসব প্রায় তিন লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
উৎসবে প্রতি বছর তিন-চারমাস ধরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড
এই উৎসবে প্রতি বছর তিন-চারমাস ধরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে। সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করে ফোরামের চেয়ারম্যান পার্থ ঘোষ বলেন, উৎসবকে ঘিরে জাঁকজমক তো থাকেই। তিন চারমাস ধরে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকে। বাংলার দু্র্গোৎসবে ৪০০টি সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত। পুজো কমিটিগুলি মাইক্রো অর্থনীতির সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
দুর্গাপুজোকে ঘিরে সারা বছরের রুটিরুজির ব্যবস্থা
সাকুল্যে পাঁচ দিনের উৎসব। কিন্তু তাঁকে ঘিরে কর্মকাণ্ড চলে তিন-চার মাস। প্যান্ডেল তৈরি, প্রতিমা তৈরিতে নিযুক্ত কর্মী, ইলেকট্রিশিয়ান, নিরাপত্তারক্ষী, পুরোহিত, ঢাকি, ভোগ এবং রান্নায় নিযুক্ত কর্মীরা এই উৎসবে জড়িত থাকেন। এছাড়াও ঠাকুর তৈরির বিভিন্ন উপকরণ নির্মাতারাও রয়েছেন, যাঁরা এই দুর্গাপুজোকে ঘিরে সারা বছরের রুটিরুজির ব্যবস্থা করেন।
দুর্গাপুজোর মূল কার্যক্রমের বাইরে যেখানে অর্থনীতি
এছাড়া দুর্গাপুজোর মূল কার্যক্রমের বাইরে, নতুন পোশাকের সম্ভারের জন্য ফ্যাশন, টেক্সটাইল, জুতো, প্রসাধনী-সহ নানা কেনাকাটা তো আছেই। এই সব জিনিসপত্র তৈরিতে মানুষ লেগে পড়ে পুজোর বহু আগে থেকে। তারপর রয়েছে সাহিত্য ও প্রকাশনা, ভ্রমণ ও পর্যটন, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, চলচ্চিত্র ও বিনোদন সহ নানা ব্যবসাক্ষেত্র।
৫০০ কোটি টাকা স্পনসর এসেছে বাংলার দুর্গাপুজোয়
এফএফডির সভাপতি কাজল সরকার বলেন, পাঁচ দিনের উৎসবে বিক্রি বেড়েছে আগের থেকে। ২০১৯-এ যে লেনদেন ৪০ হাজার কোটির ছিল, তা এখন বেড়ে ৫০ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। মহামারীর দু-বছর পর দুর্গাপুজো বাংলার অর্থনীতির জন্য এক আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। নতুন উদ্দীপনা দেখা গিয়েছে কর্পোরেটদের মধ্যেও। স্পনসরশিপের জন্য উদার তাঁরা। প্রায় ৫০০ কোটি টাকা স্পনসর এসেছে বাংলার দুর্গাপুজোয়।
২০১৯-এর দুর্গাপুজো নিয়ে সমীক্ষা
বাংলার সরকার বাংলার এই দুর্গোৎসবকে টিকিয়ে রাখতে উৎসব ভাতা চালু করেছে। প্রতি পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এই উদ্যোগ সরকারের। কেননা এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু মানুষের রুটি-রুজি। প্রতিবছর লেনদেন বাড়ছে, অর্থনীতিও বাড়ছে। ব্রিটিশ কাউন্সিল ২০১৯-এর দুর্গাপুজো নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে তা অঙ্ক দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে।