আন্দোলনকে উস্কানি দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের ভিড়ে লুকিয়ে থাকা বহিরাগতরা, দাবি আইএমএ সভাপতির
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এদিন বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা হয়।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা জট কাটাতে নানা দিক থেকে নানারকম প্রচেষ্টা হচ্ছে। অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা যাতে কর্মবিরতি শেষ করে কাজে যোগ দেন, সেজন্য রাজ্য সরকারের তরফে প্রথমে আবেদন, পরে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে তাতে কাজ হয়নি। গত চারদিন ধরে রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অচলাবস্থা চলছে। বন্ধ আউটডোর পরিষেবা।
এই অবস্থায় সারাদেশে বিভিন্ন রাজ্যে চিকিৎসক ও চিকিৎসক সংগঠন কলকাতার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব তাঁরা। সকলের একটাই দাবি যে, সুষ্ঠু পরিকাঠামো স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তৈরি করতে হবে এবং চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
এই অবস্থায় ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এদিন বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা হয়। সেখানে আইএমএ-র সভাপতি শান্তনু সেন উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন সংগঠনের আধিকারিকরা। প্রত্যেকেই আবেদন জানিয়েছেন যাতে বিক্ষুব্ধরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে নেন। কারণ সর্বোপরি রাজ্যের মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তবে এদিন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে আইএমএ-র সভাপতি শান্তনু সেন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিক্ষুব্ধ যে ছাত্রছাত্রীরা একটি দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন করছেন তাঁদের এই ভিড়ে বহিরাগত বেশ কিছু লোকজন ঢুকে পড়েছে। তাঁরাই বারবার উস্কানি দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল পথে চালিত করছেন।
এক্ষেত্রে শান্তনু সেন রাজনৈতিক প্রভাবের প্রসঙ্গ তুলেছেন। কোনও একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ ছাত্র-ছাত্রীদের উস্কানি দিয়ে তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থে এই ঘটনা ঘটাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শান্তনু। আরও বলেছেন, এদিন তিনি যখন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন সেই বৈঠকেও অনেকেই বহিরাগত ছিল। যারা এই মুহূর্তে কলেজের ছাত্র ছাত্রী নন। অনেকে পাস করে বেরিয়ে গিয়েছেন। আবার অনেকে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁরাও এই বৈঠকে হাজির থেকে গোটা ঘটনাটি অন্য পথে চালিত করার চেষ্টা করছেন।
অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী দুদিন আগে এসএসকেএম হাসপাতালে এসে যে বহিরাগত আন্দোলনকারীদের কথা তুলে বিতর্ক খাড়া করেছিলেন, এদিন আইএমএ-র সভাপতি শান্তনু সেই একই ধরনের বক্তব্য পেশ করলেন। এখন দেখার ছাত্রছাত্রীরা আইএমএ সভাপতির সঙ্গে কথা বলার পর নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে কি সিদ্ধান্ত নেন।
এদিন বিকেলে পাঁচটার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের একবার আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাবে কি জুনিয়র ছাত্র ছাত্রীরা আদৌও রাজি হবেন? এদিন দুপুরের মধ্যে তার উত্তর পাওয়া যেতে পারে।