‘আলোয় থাকতে চাইলে হাত তুলুন’, ভাঙড়বাসীর উদ্দেশে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
‘আপনারা কী চান? অন্ধকারে থাকবেন? না আলোয় থাকবেন? ঠিক করুন আপনারা। আমার উপর শুধু ভরসা রাখুন।’
ভাঙড়ের মানুষ চাইলেই পাওয়ার গ্রিড হবে। ফের একবার সাফ জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একেবারে ভাঙড়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভাঙড়বাসীর সামনে নিজে মুখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ভাঙড়বাসী চাইলেই ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প হবে।
ভাঙড়বাসী শুধু একবার বলুক- আমাদের বিদ্যুৎ চাই। আমার এক সেকেন্ড সময় লাগবে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে।' এরপরই তিনি ভাঙড়বাসীকে বুঝিয়ে দেন এলাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রয়োজনীতার কথা। বলেন, আপনারা কী চান? অন্ধকারে থাকবেন? না আলোয় থাকবেন? যদি আলোয় থাকতে চান হাত তুলুন।
ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের ভবিষ্যৎ বাসিন্দাদের ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিলেও এদিন তাঁর বক্তব্যের পরতে পরতে মমতা বুঝিয়ে দিয়েছেন, এলাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তার কথা। সেইসঙ্গে বলেছেন, 'কিছু মানুষ নিজেদের আখের গোছানোর জন্য গ্রামের নিরীহ মানুষদের ভুল বোঝাচ্ছে।
কখনও গ্রামের উপর দিয়ে বিদ্যুৎ গেলে মায়ের গর্ভ নষ্ট হয় না। এইসব রটনা কিছু প্রোমোটারি সংস্থার চাষের জমি কেড়ে নেওয়ার ফন্দি। মমতা বলেন, 'আমার উপর ভরসা রাখুন, আপনাদের জমি আপনাদেরই থাকবে। কোনও কৃষিজমি কনভার্ট করা যাবে না- আমরা এই আইন করেছি। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙড়ের ভোজের হাটে এই সভা করেন। এই সভায় পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প এলাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ জনও ভিড় করেছিলেন। পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প নিয়ে ভাঙড় উত্তাল হয়ে ওঠার পর এটাই মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম জনসভা ছিল এলাকায়। স্বভাবতই তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল জনমানসে। এদিন বিতর্কের ভাঙড়ে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেন, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল প্রবল।
তিনি বলেন, গ্রামে বিদ্যুৎ না এলে কল-কারখানা হবে কী করে? বহিরাগতরা বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে এসে আপনাদের ভুল বোঝাচ্ছে। ওদের কথায় ঝামেলা করবেন না। সমস্যা হলে সরাসরি সরকারের সঙ্গে কথা বলুন। আপনাদের সমস্যার সমাধান করে দেবে সরকারই। তিনি বলেন, 'ভালোবেসে এলে আপনাদের জন্য সব করে দেব। আমি জানি মানুষ বিদ্যুৎ চায়, আলো চায়, উন্নয়ন চায়।
কতগুলো মাওবাদী এসে তা স্তব্ধ করে দেবে, তা মেনে নেওয়া হবে না। ওরা এলাকা থেকে আন্দোলনের নামে টাকা তুলে চলে যাবে। কিন্তু আপনারা গ্রামেই থাকবেন, তাই গ্রামের ও এলাকার উন্নয়নের কথা আপনাদের সর্বাগ্রে বোঝা উচিত।' তিনি ভাঙড়বাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, মনে রাখবেন, গুন্ডারা কখনও সম্পদ হতে পারে না। ওরা দু'দিন বোমা ফাটাবে, তারপর চলে যাবে।
এদিন ভাঙড়ের মঞ্চ পাহাড়বাসীর জন্যও বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, 'পাহাড়ে আমাকে চমকে ছিল। বলেছিল, পাহাড়ে ঢুকতে দেবে না। আমি কিন্তু ঢুকেছি, মিটিং করেছি। পাহাড়ে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল, আমি দাঁড়িয়ে থেকে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে তবে এসেছি।' তিনি এদিন আবারও আবেদন জানান পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার। বার্তা দেন অযথা অশান্তির বীজ বপন করে পাহাড়ের শান্তি বিঘ্নিত করবেন না।