কুয়োর পাশে বসে ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন যুবক, তারপরের কাহিনি শুনলে চমকে যাবেন
বাড়ির কুয়োর পাশে বসে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছে এক যুবক। একেবারে ডাক ছেড়ে কান্না। সেই কান্না শুনে লোক জড়ো হয়ে যায় তৎক্ষণাৎ। খবর যায় এলাকার কাউন্সিলরের কাছে।
বাড়ির কুয়োর পাশে বসে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছে এক যুবক। একেবারে ডাক ছেড়ে কান্না। সেই কান্না শুনে লোক জড়ো হয়ে যায় তৎক্ষণাৎ। খবর যায় এলাকার কাউন্সিলরের কাছে। কাউন্সিলর এসে দেখেন উবু হয়ে বলে কাঁদছে। কাঁদছো কেন? জিজ্ঞাসা করতেই কাঁদো কাঁদো গলায় সে যে কাহিনি শোনাল, তা শুনে চমকে যাবেন সবাই।
কুয়ো দেখিয়ে হাওড়ার বেলুড়ের ওই যুবক শ্যামল মাজি জানায়, স্ত্রীকে খুন করে ফেলে দিয়েছি এই কুয়োতে। তা বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠে সে। কেন? কেন খুন করলে স্ত্রীকে? ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে খুব ঝগড়া হয়েছিল স্ত্রীর সঙ্গে। সেই বচসা চলাকালীন হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রী কাজলের মাথায় সজোরে আঘাত করে শ্যামল। এক আঘাতেই সব শেষ।
তারপর দেহ টানতে টানতে বাড়ির পাশের কুয়োর ফেলে দেয় সে। এরপর দেহ লোপাটের সমস্ত প্রমাণ যাতে কেউ না পায়, তার জন্য কুয়োর মুখ পাথর, ইট, পরিত্যক্ত জিনিসপত্র, বালি ও সিমেন্টের বস্তা দিয়ে ঢেকে দেয় শ্যামল। এরপর কেটে যায় ন-ন'টা রাত। কিন্তু অনুশোচনা তাকে পিছু ছাড়েনি।
মদের খেয়ালে নেশার ঘোরে যে কৃতকর্ম সে করেছে, তারপর শাস্তির তার প্রাপ্য। স্ত্রীকে হারানোর শোকে তাই বাড়ির সামনে কুয়োর দিকে তাকিয়ে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদতে থাকে শ্যামল। ওই কুয়োতেই সে 'সলিল সমাধি' দিয়েছিল স্ত্রীকে, তার পাশে বসেই তাঁকে আর্তনাদ করতে দেখে ভিড় জমান সবাই।
এরপর কাউন্সিলর নিজে পুলিশ ডাকেন। পুলিশের সামনে ঘটনা বৃত্তান্ত জানায় পেশার রিকশাচালক শ্যামল মাজি। কুয়োর ঢাকা খুলতেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। পচা-গলা দেহ উদ্ধার করা হয় কাজল মাজির। এই ঘটনায় হাওড়ার বেলুড়ে মহাবীরতলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে শ্যামলের কতা কেউ আমল দিয়ে চায়নি, তারপর যে ঘটনা প্রকাশ্যে আসে, তাতে নৃশংসতাও প্রকাশ পায়।
সবথেকে বড় কথা, এত বড় একটা হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল, দেহ লোপাট হয়ে গেল, কেউ জানতে পারল না। এদিন অভিযুক্ত নিজের মুখে স্বীকার না করলে, আদৌ তা প্রকাশ হত কি না, তা-ই সন্দেহের। যাই হোক পুলিশ গ্রেফতার করে শ্যামলকে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। শ্যামলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।