স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে সন্তান নিয়ে চম্পট! মানবাধিকারকর্মীদের সহায়তায় বিচারপ্রার্থী শিখা
স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে ফেলে রেখে কোলের সন্তানকে নিয়ে চম্পট দিয়েছিল গুণধর স্বামী। হাত-পা ভাঙা অবস্থায় স্ত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন প্রতিবেশীরা।
স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে ফেলে রেখে কোলের সন্তানকে নিয়ে চম্পট দিয়েছিল গুণধর স্বামী। হাত-পা ভাঙা অবস্থায় স্ত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন প্রতিবেশীরা। এরপর হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের তৎপরতায় শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা হয়। এখন কোলের সন্তানকে ফিরে পেয়ে 'অসুর' স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছেন শিখা মণ্ডল।
বাঁকুড়ার বড়জোড়ার বেলেডাঙা গ্রামের শিখাদেবী এখনও শয্যাশায়ী। মদ্যপ স্বামী শাবলের আঘাতে তাঁর দু-হাত, দু-পা চুরমার করে দিয়েছে। এছাড়া সিগারেটের ছ্যাঁকা থেকে শুরু করে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার তো তাঁর সারা গায়ে অজস্র। গত ২৩ এপ্রিল হিংস্র পশুর মতোই স্ত্রীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বামী সঞ্জয় মণ্ডল। লোহার শাবল দিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয় শিখাদেবীর। তারপর রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে ফেলে রেখে মেয়ে সঞ্চিতাকে নিয়ে পালিয়ে যায় সে।
[আরও পড়ুন: অনুমতি না নিয়ে ফুল তোলার অভিযোগ! শাশুড়ির ওপর নির্মম অত্যাচার, দেখুন ভিডিও]
একদিকে শারীরিক আঘাতের যন্ত্রণা, অন্যদিকে মেয়েকে হারানোর কষ্ট নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়াই শুরু করেন তিনি। প্রতিবেশীরাই এগিয়ে এসে তাঁকে ভর্তি করেছিলেন হাসপাতালে। একটু সুস্থ হয়ে উঠতেই তিনি হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের শরণাপন্ন হন। হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক দেবমাল্য সেনগুপ্তের নির্দেশে স্থানীয় সদস্যরা শিখাদেবীর পাশে দাঁড়ান।
তাঁরাই পিসির বাড়ি থেকে উদ্ধার করে আনেন সঞ্চিতাকে। শিশুকন্যাকে ফিরে পেয়ে বুকে বল পান শিখা। তাঁর লড়াই শুরু হয়। সঙ্গে রয়েছেন মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যরা। এই একটা আশার আলো নিয়েই অত্যাচারী স্বামীর বিরুদ্ধে, অত্যাচারী শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন শিখা মণ্ডল।
অভিযোগ, শিখাদেবী সারা গায়ে অত্যাচারের চিহ্ন নিয়েও অত্যাচারীদের শাস্তি দিতে পুলিশের সহায়তা পাননি প্রথমে। তাঁর স্বামী পুলিশের গাড়ি চালায়। সেই কারণেই পুলিশ প্রথমে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। এরপর অবশ্য মানবাধিকার কর্মীদের তৎপরতায় পুলিশ এফআইআর নেয়।
পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত সঞ্জয় মণ্ডলকে। এখন স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চান শিখাদেবী। হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের সদস্যরা তাঁর পাশে থাকায় চরম শাস্তি দিতে পারবেন বলে বিশ্বাস তাঁর। যতদিন না শাস্তি দিতে পারেন, ততদিন তাঁর লড়াই চলবে বলে জানান শিখাদেবী।