স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে, উত্তেজনা রায়গঞ্জে
তাস খেলা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ। তারপরই স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় স্বামী সহ শ্বশুর ও শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ থানার অধীন বিষ্ণুপুর গ্রামে। মৃত গৃহবধূর নাম নূর বানু। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে এদিন সকালে ঘটনাটি জানাজানি হতেই ছুটে আসেন গ্রাম বাসীরা। এরপর গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃত গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি।
গত মঙ্গলবারই তিন তালাক বিল পাশ হয়। এরপরই এমন ঘটনা। গ্রামের বাসিন্দা সহ মৃতের পরিবারের লোকজন দোষীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, চার বছর আগে ইটাহার থানার ডামডোলিয়া গ্রামের বাসিন্দা নূর বানুর সঙ্গে বিয়ে হয় রায়গঞ্জের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ সুন্দরলালের। তাস খেলা নিয়ে স্ত্রী নূর বানুর সঙ্গে মাঝেমধ্যেই চরম বিবাদ লেগে থাকত। স্ত্রীকে ব্যাপক মারধরও করত মহম্মদ সুন্দরলাল। দিনের পর দিন অত্যাচারের মাত্রা ক্রমশই বাড়ছিল । একবার মহম্মদ সুন্দরলাল তার স্ত্রী নূর বানুকে তালাকও দেয়। এই নিয়ে নূর বানু তাঁর বাবা-মাকে জানায়। পরে সালিশি সভায় তা মিটমাটও হয়েছিল।
এরপরে বুধবার রাত দশটা নাগাদ স্বামী মহম্মদ সুন্দরলাল স্ত্রী নুর বানুকে আবার তিন তালাক দেয়। এরপরই নূর বানু তাঁর মাকে ফোন করে কাতর আর্তি জানিয়ে বলেন 'আমাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলবে। আমাকে বাঁচাও।" সকাল হতেই নূর বানুর পরিবারের লোকজন ছুটে আসেন গ্রামে। তবে ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এসে দেখেন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তাঁদের আদরের মেয়ের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।
এদিন সকালে নূর বানুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত নূর বানুর স্বামী মহম্মদ সুন্দরলাল সহ শ্বশুর, শ্বাশুড়ি সবাই পলাতক। এই ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তাঁরা। এদিন এই ঘটনায় দোষীদের চরমতম শাস্তির দাবি তুলেছেন দক্ষিণ বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দারা।