অধীর-গড়ে থাবা বসাচ্ছে বিজেপি! তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে আসন্ন দলবদল
পঞ্চায়েতে গড় হারিয়েছে কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদের নবাব-গড়ের কর্তৃত্ব এখন তৃণমূলের হাতে। অধীর মিথ খতম। এই অবস্থায় তাঁর দলেই প্রশ্ন উঠে পড়ল লড়াই করার মানসিকতা নিয়ে।
পঞ্চায়েতে গড় হারিয়েছে কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদের নবাব-গড়ের কর্তৃত্ব এখন তৃণমূলের হাতে। অধীর মিথ খতম। এই অবস্থায় তাঁর দলেই প্রশ্ন উঠে পড়ল লড়াই করার মানসিকতা নিয়ে। আর তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্ত ময়দানের জন্য এবার খোঁজ শুরু করে দিলেন হুমায়ুন কবীর। তবে কি অধীরের ডানহাত এবার চললেন বিজেপিতে? পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা।
রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন হুমায়ুন কবীর। ভোট গণনার দিনই নাকি তিনি এলাকা ছেড়ে দিল্লিতে পাড়ি দিয়েছেন। সেখানে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করে খুব শীঘ্রই তিনি গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেসের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই হুমায়ুন কবীর দল ছাড়তে চলেছেন বলে রাজনৈতিক মহলে খবর।
অধীর চৌধুরীর সঙ্গ ত্যাগ করে তৃণমূলে পাড়ি দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। তারপর ফের তিনি ফিরে আসেন অধীরের ছত্রছায়ায়। আবার তিনি দলবদল করতে চলেছেন। এবার তিনি পদ্মশিবিরে পসার জমানোর চেষ্টা করছেন। তিনি কংগ্রেসের লড়াই নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, এই বারবার তাঁর পরিচিতি ও দায়বদ্ধতাও প্রশ্নের মুখে পড়তে বাধ্য বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ান হুমায়ুন। কিন্তু ভোটের দিন সকালেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন তিনি।বৃহস্পতিবার হুমায়ুন কবীর জানান, পুলিশ ও শাসক দলের গুন্ডামিতে কংগ্রেস প্রার্থী ও কর্মীরা লাঞ্ছিত হয়েছেন। শাসকদল তাঁদের ভোট করতে দেয়নি। সে কারণে ভোটের দিন তিনি সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
এছাড়া তাঁর এলাকার কয়েকটি পঞ্চায়েতের কয়েকজন কাউন্টিং এজেন্ট ভোট গণনার দিন গণনা কেন্দ্রে গেলে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হুমায়ুন। এদিন তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, 'তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করার সাহস ও মানসিকতা বর্তমানে জেলা কংগ্রেসের নেই। কংগ্রেস এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাজ্যে এত মার খাচ্ছে দল, কিন্তু দলের হাইকমান্ডের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। এই কংগ্রেসের সঙ্গে থাকা যায় না।' শীঘ্রই কংগ্রেস জেলা সহ-সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন তিনি। এরপর তাঁর গন্তব্য হতে পারে বিজেপি!
এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি বলেন, 'কে কোন দলে যাবেন, সেটা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার। তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে আর চলতে চান কি না, সেটা তিনিই ঠিক করবেন। তবে এটা ঠিক যে, হুমায়ুন কবীরকে হারানোর জন্য তৃণমূল সবরকম চেষ্টা করেছে। কংগ্রেস তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেনি।'
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সাল থেকে রাজনীতিতে আছেন বেলডাঙা ২ নম্বর ব্লকের শক্তিপুরের হুমায়ুন কবীর। ৩০ বছর ধরে কংগ্রেস করছেন তিনি। ২০১১ সালে রেজিনগর বিধানসভা থেকে কংগ্রেস বিধায়ক নির্বাচিত হন হুমায়ুন। এরপর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ২০১২ সালে তৃণমূলের মন্ত্রী হন। মাত্র ৬ মাস মন্ত্রী থাকার পর উপনির্বাচনে রেজিনগরে পরাজিত হন হুমায়ুন। এর পরই তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য তাঁকে শোকজ করে শাসক দল। তারপর ফের কংগ্রেসে ফিরে আসেন তিনি।