সালকিয়ায় প্রতিবাদী তরুণের মৃত্যু, অধরা অপরাধীরা
কলকাতা, ২ ফেব্রুয়ারি : তাঁর অপরাধ ছিল তিনি ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করেছিলেন। তারই করুণ পরিণতি মৃত্যু। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মাপা গেলেন অরূপ ভাণ্ডারী, সালকিয়ার সেই প্রতিবাদী যুবক। অথচ এখনও অধরা দোষীরা। পুলিশের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ফুঁসছে গোটা সালকিয়া।
ঘটনার সূত্রপাত ২৮ ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পুজোর বিসর্জন ঘিরে। প্রতিমা নিরঞ্জনে বেরিয়েছিল সালকিয়ার একটি পাড়ার বাসিন্দারা। তাদের মধ্যে কয়েকজন যুবক রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন তরুণীকে উত্যক্ত করার চেষ্টা করে। নানা অশালীন মন্তব্যও করতে থাকে। বিষয়টি চোখে পড়ে অরূপের। শক্ত চোয়ালে প্রতিবাদ করতে এগিয়ে যান অরূপ। প্রতিবাদ করতেই ছেলেগুলো চলে যায়। নিয়ন্ত্রণে চলে আসে পরিস্থিতি।
কিন্তু অরূপ তখন বুঝতে পারেননি এই নীরবতা ঝড়ের আগের বার্তা। বিসর্জন সেরে ফেরার সময়, লাঠি, লোহার রড নিয়ে অরূপের উপর চড়াও হয় ৫ দুষ্কৃতী। অরূপের সঙ্গে তার এক বন্ধুও ছিল। দুজনের উপর লাঠিবর্ষণ শুরু করে দুষ্কৃতীরা। লোহার রড় দিয়ে অরূপের মাথায় আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অরূপ। এরপর অরূপের বন্ধু সাহায্যের জন্য চিৎকার শুরু করলে পাড়ার কয়েকজন ছুটে আসতেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।
অরূপকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরেই মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে কোমায় চলে যান অরূপ। পাঁচদিন কোমায় থাকার পর আজ, সোমবার সকাল সাড়ে ৬ টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ এখনও অপরাধীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি।
এই গোটা ঘটনায় যেমন একদিকে অরূপের মৃত্যুতে বিষণ্ণতা, অন্যদিকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে ফুঁসছে সালকিয়া। অপরাধীদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রেফতার করা হোক এই দাবি জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। অরূপের ঠাকুমাও দোষিদের কঠোর শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন।
অরূপের মৃতদেহ আজ মেডিক্যাল কলেজে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।