এক একটা গরু পাচারে কত ভাগ পেতেন কেষ্ট, অনুব্রতকে জেরায় প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এক একটা গরু পাচারে কত ভাগ পেতেন কেষ্ট, অনুব্রতকে জেরায় প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য
২ দিন হল অনুব্রত মণ্ডলকে হাতে পেয়েছে সিবিআই। তার প্রথম জেরাতেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য আসতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর জেরায় অনুব্রত মণ্ডল ইডিকে জানিয়েছে, প্রত্যেকটি গরু পাচার করার জন্য বিএসএফকে ২০০০ টাকা করে দেয়া হত। আর কাস্টমস পেত ৫০০ টাকা করে। কাজেই টিএমসি যে বারবার দাবি করেছে বিএসএফ জড়িত রয়েছে। সেটাই তবে সত্যি হতে চলেছে। এবার কি বিএসএফের কাউকে জেরা করবে ইডি। এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অনুব্রতকে জেরা
সকাল ১০টা থেকে দফায় দফায় অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করে চলেছেন আধিকারীকরা। মধ্যাহ্ন ভোজনের পর ফের শুরু হয়েছে জেরা। কেষ্টকে জেরায় কোনো ফাঁক রাখতে চাইছে না ইডি। সূত্রের খবর গরুপাচার কাণ্ডে বিভিন্ন নথি সামনে রেখে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে কেষ্টকে। যাতে কোনো ভাবেই সে কেটে বেরিয়ে আসতে না পারে সেই চেষ্টা করছে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
কতটার বখরা হত
জেরায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা কেষ্টকে জেরা করে জানতে পেরেছে প্রতিটি গরুপাচারের জন্য ২০০০ টাকা করে পেত বিএসএফ। আর কাস্টমসের কর্তব্যরত অফিসারদের দেয়া হত ৫০০ টাকা করে। অর্থাৎ গরু পাচারে একেবারে ভাগ বাটোয়ারা করেই হত কারবার। কিন্তু অনুব্রত নিজে কত টাকা পেতেন তার তথ্য এখনো বের করে উঠতে পারেনি সিবিআই।
কোন পথে গরুপাচার
সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ইলামবাজারের সুখবাজার পশুহাটে এনে রাখা হত গরুগুলিকে। যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে সেকারণেই এই ব্যবস্থা করা হত। সেখান থেকে বীরভূমের বিভিন্ন রাস্তাকে নিরাপদ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহার করে সীমান্তের জেলায় পাঠানো হত গরুগুলি। সেখান থেকে পাচার করা হতো বাংলাদেশে। তার জন্য মোটা কাটা ভাগ যেত বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল এবং প্রভাবশালীদের কাছে। অনুব্রত যাতে এই সব তথ্য এড়িয়ে যেতে না পারে তার জন্য কাগুজে প্রমাণ পর্যন্ত পেশ করতে শুরু করেছেন ইডির তদন্তকারীরা।
যোগ রয়েছে বিএসএফের
গরুপাচার কাণ্ডে বিএসএফের যোগ রয়েছে তা আরো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে জেরায়। সতীশ কুমার নামে বিএসএফের প্রাক্তন এক কমান্ডান্টকে আগেই গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তিনি ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কাজ করেছিলেন সেখানে। সেই দুই বছরে সীমান্ত দিয়ে ২০ হাজারের বেশি গরু পাচার হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে সিবিআই। বীরভূম, মালদা এবং মুর্শিদাবাদকে গরুপাচারের সেফ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহার করা হত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন গরুপাচার কাণ্ডে সীমান্তের জেলাগুলির অনেক পুলিশ অফিসার জড়িত রয়েছেন।
কত টাকা পেতেন অনুব্রত
বিপুল সম্পত্তির মালিক অনুব্রত। ১০০ কোিট টাকার উপরে সম্পত্তি রয়েছে তাঁর। সিবিআই তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জমি-বাড়ি মিলিয়ে বিপুল সম্পত্তি কিনেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। িনজের নামে, মেয়ের নামে স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি কিেনছিলেন তিনি। মাসে তিন চারবার সম্পত্তি কেনার খবর পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। সেই থেকেই মনে করা হচ্ছে গরু পাচারের টাকা দিয়ে এই বিপুল সম্পত্তি তৈরি করেছিলেন কেষ্ট। কিন্তু টাকা তাঁর হাতে আসত তা এখনো জানা যায়নি।