২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কতগুলি আসন ধরে রাখতে পারবে বিজেপি, অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কতগুলি আসন ধরে রাখতে পারবে বিজেপি, অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট
২০১৯-এর ভোটে ১৮টি লোকসভা আসনে জিতে বিজেপির যদি উত্থান হয়, ২০২১-এর ভোটের ফল গেরুয়া শিবিরের কাছে বিরাট আঘাত। তার পরবর্তী উপনির্বাচন ও পুর নির্বাচনে তো বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছে একেবারে। এই অবস্থায় যদি লোকসভা ভোট হয়, তবে বিজেপি কতগুলি আসন জিততে পারে, তা নিয়েই অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট তৈরি করে ফেলল বিজেপি।
২০২৪-এর অঙ্ক কষা শুরু বিজেপির
২০২২-এ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি দারুণ ফল করেছে। বিপর্যন্ত হয়েছে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। পাঁচের মধ্যে চার রাজ্যে বিজেপির কাছে হেরেছে কংগ্রেস আর এক রাজ্যে কংগ্রেস হেরেছে আম আদমি পার্টির কাছে। কংগ্রেস আরও ক্ষীণশক্তিতে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় বিজেপি ২০২৪-এর অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে।
বাংলা থেকে ২৫টি আসনে জিতবে বিজেপি!
২০২৪-এ যে তারাই ফের ক্ষমতায় আসছে এবারের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের ফলে তার আভাস রয়েছে বলেই বিজেপি প্রচারের পাল্লা ভারী করেছে। সেই আঙ্গিকেই বিজেপির পক্ষ থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অদিকারী দাবি করেছিলেন ২০২১-এ বাংলা থেকে ২৫টি আসনে জিতবে বিজেপি।
অর্ধেক আসন ধরে রাখা সম্ভব হবে কি!
বিজেপি শুধু মুখের কথায় বিশ্বাসী নয়, তারা বাংলাজুড়েই অভ্যন্তরীণ এক রিপোর্ট তৈরি করেছে। তারা জানতে চেয়েছে ২০১৯-এ যে ১৮টি আসন জিতেছিল বিজেপি, এখন ভোট হলে তার কটি মিলতে পারে। তারপর তাঁরা নতুন আসন নিয়ে ভাবনা চিন্তা করবেন। বিজেপিমনে করছে, এখন গোটা বাংলায় সংগঠনের হাল যেমন, তাতে অর্ধেক আসন ধরে রাখা সম্ভব হবে কি না সংশয় রয়েছে।
১৮ আসন নিশ্চিত করতে চাইছে বিজেপি
শুভেন্দু অধিকারী যতই দাবি করুন, বিজেপির অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে- এখনই যদি সংগঠন সংস্কার না করা যায়, তবে তাদের পক্ষে ১৮টি আসন ধরে রাখাই সমস্যার হবে। বিজেপির সংগঠনকে সর্বাগ্রে চাঙ্গা করতে হবে। সংগঠনের হাল না ফেরালে জেতা আসন ধরে রাখাই দুঃসাধ্য হয়ে যাবে। তাই সবার আগে ১৮ আসন নিশ্চিত করতে চাইছে বিজেপি।
২০২১-এর পর মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি
২০১৯-এ যেভাবে বাংলার রাজনীতিতে উত্থান হয়েছিল বিজেপির, ২০২১-এর পর সেই একই গতিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তারপর বিজেপির নেতৃত্বে বদল এসেছে ঠিকই, কিন্তু সংগঠনের খোলনোলচে বদল হয়নি। বরং অনেক বিজেপি নেতা-কর্মী নিষ্ক্রিয় ও নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় বুথ ধরে ধরে শক্ত বাড়াতে উদ্যোগী বিজেপি। এখন সেই কাজে বিজেপি কতটা সফল হয়, তার উপর নির্ভর করবে তাদের ভবিষ্যৎ।
আসানসোলের দিকে বিশেষ নজর উপনির্বাচনে
সম্প্রতি ১১৩টি পুরসভার ভোট হয়ে গেল। সেখানে আদতে কোনও লড়াই দিতে পারেনি বিজেপি। এর প্রধান কারণ বুথস্তরে সংগঠন না থাকা। শুধু হাওয়ায় ভর করে সবসময় জেতা যায় না। সেইই ধ্রুব সত্যটাই প্রমণিত হয়ে গিয়েছে সম্প্রতি পুরভোটে। আগামী মাসে বাংলায় ফের উপনির্বাচন। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র ও বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হবে। এই দুই কেন্দ্রের মধ্যে আসানসোলের দিকে বিশেষ নজর রাজনৈতিক মহলের।
উপনির্বাচনে তাই অ্যাসিড টেস্ট হয়ে যাবে
আসানসোল কেন্দ্রে আজ পর্য়ন্ত জিততে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। টানা আটটা নির্বাচনে সিপিএম এই কেন্দ্র থেকে জয় পায়, তারপর বিজেপির হাত ধরে প্রথম পরিবর্তন আসে। বাবুল সুপ্রিয় বিজেপির টিকিটে পর পর দুবার এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন এবং নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় স্থান পান। এবার তিনি বিজেপি ও সাংসদ পদ ছেড়ে দেওয়ার পর ফের নির্বাচন হচ্ছে। সাধারণ নির্বাচনের এক বছর আগে উপনির্বাচনে তাই অ্যাসিড টেস্ট হয়ে যাবে, এই মুহূর্তে ওই কেন্দ্রে কার শক্তি কতটা। বিজেপি এই আসন ধরে রাখতে পারে কি না, তা মস্তবড় ফ্যাক্টর।
২০২৪-এর আগে অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল, যদি...
আসানসোল কেন্দ্রটি ধরে রাখতে না পারলে ২০২৪ ভোটের আগে আরও চাপ বাড়বে সুকান্ত মজুমদারদের ওপর। শুধু ভিনরাজ্যে জয়ের পর ২০২৪-এর আগে যে হাওয়া তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে, সেই বেলুন চুপসে যাবে আসানসোলে হারলে। বাবুল সুপ্রিয় এখন তৃণমূলে। তিনি আসানসোলে প্রার্থী না হলেও তৃণমূল এবার ‘বিহারীবাবু' শত্রুঘ্ন সিনহাকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে। বাবুলের ছায়া আর বিহারীবাবুর ছবিতে ভর করে এবার তৃণমূল যদি জয় তুলে নিতে পারে, তবে ২০২৪-এর আগে অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল- এ কথা বলতেই হবে।