শুভেন্দু দল ছাড়লে কতগুলি আসন হারাতে পারে তৃণমূল! পরিসংখ্যানে চোখ কপালে উঠবে
শুভেন্দু দল ছাড়লে কতটা প্রভাব পড়তে পারে বাংলার রাজনীতিতে, তা মাপতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা যে হিসেব দিচ্ছেন তাতে তৃণমূলের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য। শুভেন্দু অধিকারী সবে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। এরপর দল ছাড়লে আসন্ন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।

মমতার পর সবথেকে বড় নেতা, জননেতা আবার দক্ষ সংগঠকও
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকার মমতা-পরবর্তী প্রজন্মের সবথেকে বড় নেতা। তিনি জননেতা আবার দক্ষ সংগঠকও। একা হাতে তিনি পাঁচ-পাঁচটা জেলার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। সেই জেলাগুলি তো বটেই। আর অন্তত ১০টি জেলায় শুভেন্দুর দখল আছে। দাদার অনুগামীর সংখ্যা ছড়িয়ে রয়েছেন ১৫ বা ততোধিক জেলায়।

তৃণমূলও শুভেন্দু অধিকারীকে ধরে রাখতে তৎপর
এহেন শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তৃণমূলও শুভেন্দু অধিকারীকে ধরে রাখতে তৎপর। সেইসঙ্গে বিজেপিও শুভেন্দু অধিকারীকে পেতে আগ্রহী। আগ্রহী কংগ্রেসও। শুভেন্দুর গুরুত্ব বিচার করেই সব দল শুভেন্দুকে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এখন দেখার শুভেন্দু অন্য কোনও দলে যোগ দেন, নাকি নতুন কোনও মঞ্চ বা দল তৈরি করেন।

হলদিয়ায় তৃণমূল পাল্টা মিছিল করে শক্তি যাচাই করতে চাইছে
শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর চাপে পড়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই জল মাপতে মহিষাদলে শুভেন্দু অরাজনৈতিক সভার দিনে ১০ কিলোমিটার দূরে হলদিয়ায় তৃণমূল পাল্টা মিছিল করে শক্তি যাচাই করতে চাইছে। কোন সভায় কোন নেতা যায় সেদিকে নজর রাজনৈতিক মহলের। সব পক্ষই এখন পাখির চোখ করেছে হলদিয়া ও মহিষাদলের দিকে।

যে সব ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর হতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী
তবে শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরেও শুভেন্দুর ভালো দখল। অনেক আসে তিনি ফ্যাক্টর হবে। সেইসঙ্গে জঙ্গলমহলেও শুভেন্দু অধিকারী প্রভাব ফেলবেন। বিশেষ করে ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ার একাংশে শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাব রয়েছে। দুই মেদিনীপুর-সহ জঙ্গলমহল বাদে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুরেও শুভেন্দু ফ্যাক্টর হতে পারেন।

শুভেন্দু দল ছাড়লে কতগুলি আসন হারাতে পারে তৃণমূল
সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়লে অন্তত ৪৫ আসন হারাতে হতে পারে তৃণমূলকে। শুভেন্দু অনুগামীরা বেরিয়ে এলেই তৃণমূল ওই আসনগুলি হেরে যেতে পারে। তাঁদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ারও দরকার হবে না। শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়লেই ওই আসনগুলির ভাগ্য লেখা হয়ে যাবে একপ্রকার।

২৩টির মধ্যে ১৫ থেকে ১৮টি জেলায় প্রভাব শুভেন্দুর
এইসব নানা কারণ চিন্তা করেই শুভেন্দুকে রাখতে শেষপর্যন্ত আলোচনার দুয়ার খোলা রেখে দিয়েছে তৃণমূল। শুভেন্দুকে নিয়ে আশাবাদীও তারা। যে নেতার ২৩টির মধ্যে ১৫ থেকে ১৮টি জেলায় প্রভাব থাকে, তাঁকে হেলাফেলা করা যায় না। তৃণমূলের মতে অন্য দলও তাই শুভেন্দুকে গুরুত্ব দিয়েই চাইছে। শুভেন্দু এখন কোন দিকে যান সেটিই দেখার।

শুভেন্দু অধিকারী যখন রাজ্য-রাজনীতিতে জল্পনার কেন্দ্রে
প্রায় তিন মাস ধরে চাপানউতোরের পর শুভেন্দু অধিকারী প্রথমে অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে জনসংযোগ করে গিয়েছেন। তারপর তিনি একে একে পদ ত্যাগ করেছেন। একদম প্রথমে তিনি পরিবহণ নিগম ছেড়েছেন, তারপর এইচআরবিসির চেয়ারম্যানের পদ ছেড়েছেন। তারপর তিন মন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছেন। সবশেষে তিনি এইচডিএর চেয়ারম্যান পদও ছেড়ে দিয়েছেন। এই অবস্থায় জল্পনার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।