রাত বাড়লেই নিশির ডাক, প্রেতাত্মা দেখে মূর্ছা গেল বধূ! ওঝার তুকতাক কালনাতেও
জলপাইগুড়ি, হুগলির পর পূর্ব বর্ধমানের কালনা। ফের ঝাড়ফুঁক, তুকতাক, তেলপোড়ো, জলপোড়া দিয়ে ভূত তাড়ানোর তোড়জোড়। ওঝার কেরামতিতে কুসংস্কারের অন্ধকারে এখনও ঢেকে এলাকা।
জলপাইগুড়ি, হুগলির পর পূর্ব বর্ধমানের কালনা। ফের ঝাড়ফুঁক, তুকতাক, তেলপোড়ো, জলপোড়া দিয়ে ভূত তাড়ানোর তোড়জোড়। ওঝার কেরামতিতে কুসংস্কারের অন্ধকারে এখনও ঢেকে এলাকা। শুধু কি ঝাড়ফুঁক-তুকতাক, গৃহবধূকে জুতো চিবনোর মতো আমানবিক ঘটনাও ঘটল কালনায়। তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও অন্ধবিশ্বাসের করালছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেন না মানুষ।
কিন্তু কেন এই অমানবিক ঘটনা? কেন ভূত তাড়াতে ওঝার দ্বারসথ মানুষ? কেন মনের ভূত তাড়ানোর উদ্যোগ নেই সাধারণের? প্রশ্ন উঠছে বাংলার বিভিন্ন জেলায় এই ভূতের তাণ্ডব আর ওঝার কেরামতির ঘটনায়। মানুষ এখনও পারেনি কুসংস্কারের অন্ধকার ভেদ করে আলোয় ফিরতে।
প্রায়ই
নাকি
এলাকায়
শোনা
যেত
নিশির
ডাক।
এলাকায়
প্রচার
বছর
খানেক
আগে
দুই
যুবক
মারা
গিয়েছিল,
তারাই
নাকি
রাত-বিরেতে
ডাকে।
আর
সেই
দুই
যুবকেরই
ছায়া
নাকি
দেখতে
পেয়েছিলেন
গৃহবধূ।
তারপর
থেকেই
ঘনঘন
মূর্ছা
যাচ্ছেন
তিনি।
শারীরিক
ও
মানসিক
নানা
সমস্যায়
ভুগছেন।
স্থানীয়দের
অন্ধবিশ্বাস,
ওই
দুই
যুবকের
আত্মাই
ভর
করেছে
বধূকে।
দিন
১৫
আগে
থেকে
ঘটনার
সূত্রপাত।
গৃহবধূ
পল্লবী
হালদার
সন্ধ্যায়
অন্ধকার
রাস্তার
হঠাৎ
এক
ছায়া
দেখে
আঁতকে
ওঠেন।
তারপর বাড়িতে এসে তিনি বলেন, তিনি মৃত দুই যুবক প্রকাশ ও মঙ্গল বিশ্বাসের ছায়া দেখেছেন। সেই ভয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর চিকিৎসক দেখিয়েও রোগ সারেনি। স্থানীয়দের কথা শুনে স্থানীয় এক ওঝার শরণাপন্ন হন।
বৃহস্পতিবার থেকে ঝাড়ফুঁক শুরু হয়। তিনদিন ধরে ওঝার নানা কেরামতি চলে। তেলপোড়া, জলপোড়া, মন্ত্রপাঠ- সবকিছুই চলে। গৃহবধূকে মুখে জুতো নিয়ে কয়েকশো মিটার দূরে রেললাইনের ধারে ফেলে দিয়ে আসতে বলেন ওঝা। ওঝার নির্দেশ মেনে তাই করেন গৃহবধূ। ওই ওঝা তারপর বলেন, ওই গৃহবধূ এখন সম্পূর্ণ সুস্থ, ভূত পালিয়েছে। আর কোনও অসুবিধা হবে না। তা নিয়েই এখন চর্চা চলছে।
এরপরই সচেতনতা ফেরাতে বিজ্ঞানমঞ্চ প্রচার শুরু করছে। মানুষের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দূর করতে হবে। প্রশাসনও সরব হয়েছে স্থানীয় মানুষের মনের ভূত দূর করতে। কুসংস্কারবিরোধী প্রচার চালানো হবে এলাকায়। এর আগে হুগলির গোঘাটে ওঝার ঝাড়ফুঁকে বন্দনা কুণ্ডু নামে এক তরুণী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
ভূত তাড়াতে গৃহবধূর মুখের উপর জ্বলন্ত ধুনো ছুড়ে মারা হয়। তারপর ঝাঁটা গিয়ে মার তো ছিলই। এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওঝা ও তার সঙ্গীরা। এবার কালনায় ওঝার কেরামতি দেখ সাধারণ মানুষ। জলপাইগুড়িতে পাশাপাশি দুটি গ্রামে ছাত্রীদের ভূত ধরেছে বলে রটে যায়। সেখানেও ওঝার ঝাড়ফুঁক চলে।