ভালোবেসে ঘর ছেড়েছিলেন, আলোর উৎসবে সোনার সংসার গড়ার স্বপ্ন পুড়ে খাক বধূর
ভালোবেসে যার হাত ধরে ঘর ছেড়েছিলেন, ছেড়েছিলেন বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনকে, মাত্র দুমাসেই সেই প্রেমের ইতি। ছারখার হয়ে গেল বধূর সোনার সংসার গড়ে তোলার স্বপ্ন।
ভালোবেসে যার হাত ধরে ঘর ছেড়েছিলেন, ছেড়েছিলেন বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনকে, মাত্র দুমাসেই সেই প্রেমের ইতি। ছারখার হয়ে গেল বধূর সোনার সংসার গড়ে তোলার স্বপ্ন। এক লহমায় পুড়ে খাক গৃহবধূর পুরো শরীর। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে খুনের পর গৃহবধূর দেহ ঘরেই পুড়িয়ে ফেলা হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম লিপিকা মণ্ডল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কালনার নিঙড়া গ্রামের বাসিন্দা লিপিকার বিয়ে হয়েছিল মাস দুয়েক আগে। কালনারই মরুইডাঙা গ্রামের বাসিন্দা সুজয় মণ্ডলকে লিপিকা বিয়ে করেছিলেন বাড়ির অমতে। কিন্তু সেই বিয়ে সুখের হয়নি। শ্বশুরবাড়িতে পা রাখার পর থেকেই তাঁর উপর শুরু হয় অত্যাচার।
শুধু শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরাই নয়, যাঁকে ভালোবেসে ঘর ছেড়েছিলেন, সেই সুজয়ও আসল রূপ ধরে বিয়ের পর। পণের দাবিতে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। যে স্বপ্ন নিয়ে লিপিকা বাড়ি ছেড়েছিলেন, সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় শ্বশুরবাড়ি আসার পরই। নতুন জীবনে প্রবেশ করার জন্য ভুল পা ফেলার খেসারত দিতে হয় তাঁকে।
অভিযোগ, লিপিকাকে চাপ দেওয়া হয় নগদ ৩০ হাজার টাকা, ৩ ভরি সোনা, একটি মোটরবাইক বাপের বাড়ি থেকে আদায় করে আনার জন্য। বাপের বাড়িতে সেই কথা জানান লিপিকা। মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে লিপিকার দিনমজুর বাবা ছ-মাস সময় চেয়ে নেন। কিন্তু সেই অনুরোধ মানেনি লিপিকার স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শুরু হয় নির্যাতন, শারীরিক নিপীড়ন। শেষমেষ কালীপুজোর রাতেই শেষ হয়ে যায় স্বপ্ন। আলোর উৎসবের দিনই লিপিকার দেহ পুড়ে খার হয়ে যায়। শ্বশুরবাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযোগ, খুন করে বাড়িতেই দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
[আরও পুড়ুন: সাগরে ঘণীভূত নিম্নচাপ ধেয়ে আসছে উপকূলে, আলোর উৎসব পণ্ড হওয়ার আশঙ্কা বাংলায়]
পোড়া গন্ধ পেয়েই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। স্ত্রীকে খুন করে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে সুজয় ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্তরা। পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে তাদের খোঁজে।