হাইকোর্টেও ধাক্কা খেল ইডি, অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার আবেদন খারিজ
অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার আবেদন খারিজ
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। ইডির সেই আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এর আগে আসানসোলের বিশেষ আদালত ইডির আবেদন খারিজ করে সায়গল হোসেনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে আগেই গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। এবার তাঁকে হেফাজতে পেতে চাইছে ইডি। ইডি চাইছে তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে। কিন্তু আইনি মারপ্যাঁচে ইডির সেই পরিকল্পনা কার্যকর হয়নি। এর আগে আসানসোলের বিশেষ আদালতে ইডির আবেদন খারিজ করে দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিল ইডি। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলের কাছে জরুরি ভিত্তিতে সায়গল হোসেনকে হেফাজতে নেওয়ার মামলার শুনানর আবেদনও করেছিল।
সেই মামলা নির্ধারিত দিনে শুনানির পর হাইকোর্টে জানিয়ে দিল সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারবে না ইডি। ইডির ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন খারিজ হয়ে গেল। সায়গল হোসেন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে নিম্ন আদালতের রায়কেই বহাল রাখল। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, ইডির আবেদন খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে। এবং নিম্ন আদালতের রায়কেই বহাল রাখা হচ্ছে।
আসানসোল আদালতের ডিভিশন বেঞ্চে ধাক্কা খেয়ে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিল ইডি। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে আর্জি জানিয়ে বলা হয়েছিল রবিবার ছুটির দিন হলেও এই মামলা শোনা হোক। প্রয়োজনে রাতেও শুনানির জন্য তাঁরা প্রস্তুত। যদিও হাইকোর্ট সেই আবেদনে কর্ণপাত করেনি। মামলা যথারীতি মঙ্গলবার শোনা হয়। সেখানেও ইডি সায়গল হোসেনকে হেফাজতে নিতে ব্যর্থ হল।
সায়গল হোসেনকে গ্রেফতারের পর ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল ইডি। সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আসানসোলের ভেকেশন কোর্ট। এরপর কলকাতা হাইকোর্টেও তারা ধাক্কা খেল। মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে স্পষ্ট হয়ে গেল সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না ইডির। ইডিকে কলকাতাকেই জেরা করতে হবে। আসানসোলের সিবিআই আদালত সেই অনুমতি অবশ্য ইতিমধ্যেই দিয়েছ। এবং হাইকোর্টে এদিন জানিয়ে দিয়েছে সেই আবেদল বলবৎ থাকবে।
এর আগে ইডি দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন করে সায়গলকে হেফাজতে চেয়ে। কিন্তু যেহেতু দিল্লিতে সায়গলের বিরুদ্ধে কোনও মামলা হয়নি, আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। ইডিকে আসানসোলে আবেদন জানানোর নির্দেশ দেয় দিল্লির আদালত। কিন্তু আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের পর কলকাতা হাইকোর্টেও ধাক্কা খেল তারা।
গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের পর সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে ইডি। বর্তমানে তিনি আসানসোল জেলে রয়েছে। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে তাঁর নামে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের নামে রয়েছে ফ্ল্যাট, বাড়ি, জমি মিলিয়ে প্রচুর সম্পত্তি। তা একজন পুলিশ কনস্টেবলের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁকে ইডি হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইছে।অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর সায়গল হোসেনের নামে আরও সম্পত্তির হদিশ মেলায় প্রশ্ন উঠেছে, ওই সম্পত্তি কি সায়গলেরই? নাকি তাঁর নামে সম্পত্তি অন্য কেউ কিনেছে। এই বিপুল টাকার উৎস কী? এবার তা নিয়ে সক্রিয় আরেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি।