সিবিআই-স্ক্যানারে ক্রমেই ধরাশায়ী মমতার সরকার! রাজ্য পুলিশে কি তবে আস্থা হারাচ্ছে হাইকোর্ট
একের পর এক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। রামপুরহাটের বগটুই-কাণ্ড দিয়ে শুরু হয়েছিল। তারপর একে একে পাঁচ-পাঁচটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হইকোর্ট।
একের পর এক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। রামপুরহাটের বগটুই-কাণ্ড দিয়ে শুরু হয়েছিল। তারপর একে একে পাঁচ-পাঁচটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হইকোর্ট। মাত্র ১৮ দিনের মধ্যে পাঁচটি ঘটনায় সিবিআই তদন্ত রাজ্য পুলিশের প্রতি অনাস্থারই প্রতীক। এই ট্রেন্ড রাজ্যের জন্য ভয়াবহ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আমতার আনিস-কাণ্ড থেকে রাজ্যের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো শুরু হয়। তারপর বগটুই-কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। আনিস-কাণ্ডে মৃত ছাত্রনেতার বাবা সালেম খান বারবার সিবিআই দাবি করেও পাননি, কিন্তু বগটুইকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সিবিআই তারপর ভাদু শেখ হত্যাকাণ্ডেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।
ঝালদায় খুন হয়েছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। তাঁর স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে সিবিআই দাবি করে আসছিলেন। তাঁকেও শেষপর্যন্ত নিরাশ হতে হয়নি। তপন কান্দুকে গুলি করে খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরই তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈঞ্চবের রদস্যমৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার নিরঞ্জন বৈষ্ণবের রহস্যমৃত্যুর ঘটনাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আর তা অদ্যাবধি পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেওয়া সিদ্ধান্ত। কিন্তু পরক্ষণেই ডিভিশন বেঞ্চে স্বসিত মেলে এই ঘটনায়।
কিন্তু স্বস্তির পিছু পিছু ফের অস্বস্তিকর বার্তাবহ হয়ে আসে নদিয়ার হাঁসখালিতে কিশোরীর ধর্ষণ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশের সঙ্গে মাত্র ১৮ দিনের ভিতরে পাঁচ-পাঁচটি ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল। যা রাজ্যের পুলিশের প্রতি অনাস্থার বার্তা বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলে দেয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের উপর কোনও আস্থা নেই হাইকোর্টের। একের পর এক ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছে মহামান্য হাইকোর্ট। হাঁসখালিতে কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর এই ভয়াবহ ট্রেন্ড নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের পুলিশের উপর যদি এইরূপ অনাস্থা প্রদর্শন করে হাইকোর্ট, তাহলে সাধারণ মানুষও আস্থা হারাবে। রাজ্যে আরও অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। এরপর পুলিশও আক্রান্ত হেত পারে। আর সাধারণ মানুষও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে বলে দাবি একাংশের। উল্লেখ্য, শুধু পাঁচটি সাম্প্রতিক ঘটনায় সিবিআই-ই নয়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি-সহ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলাতেও সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। এর আগে সারদা-নারদসহ ইত্যাদি মামলা তো ছিলই।