নিৃগৃহীতা ছাত্রীর পাশে মমতা, তৃণমূলের চাপেই আত্মসমর্পণ ছাত্র সংসদের জিএসের
জিএসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা ছাত্রী। তারপরই প্রবল চাপের মুখে পড়ে আত্মসমর্পণ করল অভিযুক্ত জিএস।
কুপ্রস্তাবে সায় না দেওয়ায় কলেজের ভিতরে এক ছাত্রীকে মারধর, শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতার বিরুদ্ধে। এরপর শুক্রবার রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজের জিএসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা ছাত্রী। তারপরই প্রবল চাপের মুখে পড়ে আত্মসমর্পণ করল অভিযুক্ত জিএস।
[আরও পড়ুন:দিলীপ ঘোষের পিছনের সারিতে চলে গেলেন মুকুল! তীব্র শ্লেষ 'বাচ্চা-ছেলে'র গলায়]
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিগৃহীতা ছাত্রীর মুখে ঘটনার বিবরণ শোনেন। সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন, রিষড়ার কলেজের এই নিন্দনীয় ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। পার্থবাবুও এই ঘটনার শুনে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন আগেই। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আসার পর তিনি মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে নির্দেশ দেন ঘটনাস্থলে যেতে।
সেইমতো এদিন তপন দাশগুপ্ত রিষড়া কলেজে যান, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিনী দুই পরিবারের সঙ্গেই দেখা করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা দেওয়ার পরই তৃণমূলের অভিযুক্ত ছাত্রনেতা আত্মসমর্পণ করেন থানায় গিয়ে। শ্রীরামপুর থানায় আত্মসমর্পণের পর তাঁকে শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়।
আত্মসমর্পণকারী বিধানচন্দ্র কলেজের জিএস সাহিদ হাসান খান এলাকায় প্রভাবশালী নেতার ছেলে। তার বাবা উপ পুরপ্রধান। সেই প্রভাব খাটিয়ে কলেজে তার রাজ চলত বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সাহিদ ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে প্রস্তাব দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ছাত্রীটির কাছে সে নানাভাবে যৌন আবেদন জানাত। কিন্তু কলেজের জিএসের এই প্রস্তাবে সায় দেয়নি ছাত্রীটি। তারপর কলেজের রুমে নিয়ে গিয়ে তাঁর উপর যথেচ্ছ অত্যাচার চালানো হয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে ওই নিগৃহীতা ছাত্রীটি জানান, সাহিদ তাঁকে হুমকি দেয়- 'আমার বাবা ভাইস চেয়ারম্যান, তোমার বাবা কী?' সাহিদের বাবা যে প্রবল প্রতাপশালী তা জানিয়ে তার উপর এভাবেই চাপ সৃষ্টি করত সে। ছাত্রী নিগ্রহের খবর প্রকাশ্যে আসতেই পার্থবাবু রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। আশ্বাস দেন ছাত্রীটির পরিবারকে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত জানান, সাহিদকে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন দফায় দফায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত সংসদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সামিল হল সিপিএম ও বিজেপির ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা।