কুণাল ঘোষের জবানবন্দিতে স্থগিতাদেশ চায় সরকার, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বাঁচাতেই কি এই পদক্ষেপ?
সরকারের তরফে স্থগিতাদেশ চাওয়ায় আপাতত এটা স্পষ্ট যে বিধাননগর মহকুমা আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কুণাল ঘোষের গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে বাধা দিতে চাইছে তদন্তকারীরাই।
শুক্রবারই সাসপেন্ড হওয়া সাংসদের গোপন জবানবন্দির আবেদন মঞ্জুর করে বিধাননগর আদালত। কুণালবাবুর আইনজীবীর দাবী সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির ব্যাপারে যে সমস্ত নেতা-মন্ত্রীদের নাম কুণালবাবু চাইছিলেন তাদের নাম গোপন জবানবন্দীতে আইনগতভাবে নথিভুক্ত হবে। তাই এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদিনই এই জবানবন্দীর উপর স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন সরকার পক্ষের উকিল কিন্তু সে আবেদন নাকোচ হয়ে যায়।
এদিকে আইনত গোপন জবানবন্দি দেওয়ার আগে কোনও ব্যক্তিকে আটচল্লিশ ঘণ্টা সকলের থেকে আলাদা রাখতে হয়, যাতে কেউ তাঁকে প্রভাবিত করতে না পারে। কিন্তু সারদা তছরূপ নিয়ে অন্য একটি মামলায় হাওড়া কমিশনারেটের পুলিশ কুণাল ঘোষকে দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায়। ফলে আজ কুণাল ঘোষের গোপন জবানবন্দী নেওয়া যাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
এই ঘটনায় দমদম জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কুণালবাবুর আইনজীবী। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কুণালবাবুর গোপন জবানবন্দী আটকাতেই কী পূর্ববর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্য়ে এফআইআর-এ নাম না থাকা সত্ত্বেও সারদা গোষ্ঠীর অন্য একটি মামলায় হাজির করানো হয়েছে কুণালবাবুকে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।
সারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত সহযোগিতা করতে চাইলেও তদন্তকারী সংস্থা কেন অভিযুক্তের গোপন জবানবন্দী এড়িয়ে যেতে চাইছেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে বাইরে থাকতে একের পর এক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর নামও সারদা কাণ্ডে জড়িয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। গোপন জবানবন্দীতে আরও অনেক কেঁচোর নামই বেরিয়ে আসতে পারে। তার উপর আদালতে গোপন জবানবন্দী আইনত নথিভুক্তও হয়ে যাবে। তা দল ও সরকারের ক্ষেত্রে বেশ অস্বস্তিকর হবে। সেই কারণেই কুণাল ঘোষ যাতে জবানবন্দী না দিতে পারেন তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে সরকার।