বাংলায় সাংবিধানিক নৈরাজ্য চলছে, মমতার শাসনকে কটাক্ষ জগদীপ ধনখড়ের
বাংলার গণতন্ত্র নিয়ে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ফের সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপাল সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধযমের কনক্লেভে বক্তৃতা দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেন, রাজ্যে গণতন্ত্র চাপা পড়েছে।
বাংলার গণতন্ত্র নিয়ে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ফের সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপাল সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধযমের কনক্লেভে বক্তৃতা দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেন, রাজ্যে গণতন্ত্র চাপা পড়েছে, যা আগে কখনও হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, কার্যত সাংবিধানিক নৈরাজ্য চলছে পশ্চিমবঙ্গে।
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসশাসিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ আগ্নেয়গিরির ওপর বসে আছে। রাজ্যে সংকটময় পরিস্থিতি সর্বদাই। আদতে পশ্চিমবঙ্গে কোনও গণতন্ত্র নেই। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজ্যে সিন্ডিকেট ও মাফিয়ার কথা তুলে ধরেন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরে রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়েও অভিযোগ করেন।
রাজ্যপাল আরও বলেন, "রাজ্যে সিন্ডিকেট মাফিয়াদের দ্বারা তোলাবাজি চলছে। যদি আগে নাও হয়, ২০১৮ সাল থেকে তা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলছে বলে অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। হাইকোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে রাজ্যপাল ধনখড় বলেন, "ব্যবসায় সিন্ডিকেটদের দাপট অব্যাহত রয়েছে। ফলে দমবন্ধ হয়ে আসছে ব্যবসায়ীদের।"
ভোট-পরবর্তী হিংসা সম্পর্কে রাজ্যপাল ধনখড় রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন এবং বলেন, "নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার বিষয়ে হাইকোর্ট দ্বারা গঠিত একটি কমিটি বলেছিল, 'বাংলার পরিস্থিতি শাসকের আইনের প্রকাশ'। অর্থাৎ বাংলায় শাসকের আইন চলছে। এখানে আইনের শাসন নেই।"
বাংলায় ভোট-পরবর্তী হিংসা 'অভূতপূর্ব' বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এক প্রশ্নের উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেছিলেন, "আপনি কি ধর্ষণ, খুন, অগ্নিসংযোগ, লুঠপাট এবং মর্জি অনুযায়ী ভোট দেওয়ার জন্য শাস্তি সহ্য করতে পারেন? কীভাবে এই অনাচার সহ্য করা যায়? বিচারকের আদেশ এ রাজ্যে উপেক্ষা করা হয় এবং তারপরও খুব সহজে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।"
রাজ্যপাল বলেন, "আমি ১৫ মে পর্যন্ত পুরো রাজ্য পরিদর্শন করেছি। আমি ঘুরে দেখেছি, বাংলায় মহিলারা অত্যাচারিত, তাদের কান্না থামছেই না বাংলায়। কারণ তাদের কেউ ধর্ষিত হয়েছিল, লুঠপাটের শিকার হয়েছিল, কিংবা অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। রাজ্যপাল ধনকড় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে বলেন, "বাংলা এমন একটি রাজ্যে যেখানে গণতন্ত্র কার্যত শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি 'সংবিধান লঙ্ঘনে'র অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল বলেন, "আমি প্ররোচনায় বিশ্বাস করি না। আমি আশা করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার এ আওয়াজ শুনবেন। আমি জানি আমাকে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। আমি রাজনীতির কারবারি নই। আমি শুধুমাত্র সাংবিধানিক পথ দেখাতে পারি রাজ্যকে। সংবিধান মেনে নির্দেশ দিতে পারি।"