রাজ্যপাল মুখোমুখি হলেন পড়ুয়াদের, প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বলে গেলেন কাল আবার আসছি
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট-বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপাল। শেষমেশ পড়ুয়াদের দেওয়া শর্ত মেনে তিনি ছাড় পেলেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট-বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপাল। শেষমেশ পড়ুয়াদের দেওয়া শর্ত মেনে তিনি ছাড় পেলেন। আর শর্তমতো পড়ুয়াদের প্রত্যেক প্রশ্নের মুখোমুখিও হলেন। রাজ্যপাল যাওয়ার সময় বলে গেলেন, তিনি আজ যাচ্ছেন ঠিকই, তবে কাল আবার আসবেন।
এদিন ৪৫ মিনিটেরও বেশি সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছাত্র বিক্ষোভের জেরে আটকে ছিলেন রাজ্যপাল। তারপর পড়ুয়াদেরপ গো-ব্যাক স্লোগানের মধ্যেই সর্বসমক্ষে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হয়। ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্ন করেন, এই সিএএ বা এনআরসি কি ভারতের সংবিধানের মূল তত্ত্বকে লঙ্ঘিত করছে? তা শুনে রাজ্যপাল বলেন, আপনাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হবে।
রাজ্যপাল আরও বলেন, কথা না শুনলে আলোচনা এগোবে না। অশান্তি করে কোনও সমস্যার সমাধান করা যায় না। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে। কিন্তু সংবিধান সবাইকে মানতে হবে। এদিন পড়ুয়াদের মুখোমুখি হয়ে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত বলেও জানান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
তিনি বলেন, আমি জানতাম বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হবে। তা জেনেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম। আমাকে দুর্বল মনে করবেন না। আমি সমস্ত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। ছাত্রছাত্রীদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি আমি। উত্তর দেবও। তিনি এ ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন বলে জানান।
এদিন রাজ্যপালকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভের মধ্যেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবি তোলেন ছাত্ররা। ছাত্ররা রাজ্যপাল সকাশেই জানালেন, তাঁকে চ্যান্সেলার বলে মানছি না। তাঁদের দাবি, রাজ্যপাল আদৌ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন না। সিএএ-এনআরসি-এনপিআর নিয়েও যে মত পোষণ করছেন তাঁকে রাজ্যপাল নয় পদ্মপাল বলেই মনে হচ্ছে।
ছাত্রছাত্রীরা এদিন কোনও নির্দিষ্ট ব্যানারে বিক্ষোভে সামিল হননি। সমস্ত সংগঠনের তরফে শুধু কালো পতাকা আর সিএএ-এনআরসি বিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভত্র দেখান। তাঁরা এদিন বিক্ষোভে সামিল হয়ে ও নির্দিষ্ট কিছু স্লোগান তুলে বুঝিয়ে দেন, রাজ্যপাল নির্দিষ্ট একটি পার্টির হয়ে কথা বলছেন। তাঁর কথায় রাজ্যপাল সুলভ কথাবার্তা এখনও বলতে পারেননি তিনি। তাঁর মধ্যে পক্ষপাতদুষ্টতা প্রবল।
এদিন রাজ্যপাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। কোর্ট বৈঠকে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ৪৫ মিনিটেরও বেশি আটকে থাকার পর তাঁকে বৈঠকে ঢুকতে দেন বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে রাজ্যপালকে আটকে গো ব্যাক স্লোগান চলতে থাকে। তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়ে ফিরে যেতে বলেন পড়ুয়ারা। এরপর রাজ্যপাল কথা বলতে রাজি হলে মানববন্ধন করে রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালেয় প্রবেশ করতে দেন।
রাজ্যপালকে পদ্মপাল বলে কটাক্ষ পড়ুয়াদের, বিক্ষোভের মধ্যেই উঠল পদত্যাগের দাবি
রাজ্যপালকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, বয়কটের সিদ্ধান্তে উত্তেজনা