বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত করে দিলেন রাজ্যপাল, আলোড়ন পড়ে গেল রাজ্য-রাজনীতিতে
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত করে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার টুইট করে এই বার্তা দেন। স্বতঃপ্রণোদিতভাবে রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত ঘোষণায় জানিয়ে দিয়েছেন, শনিবার থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত করে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার টুইট করে এই বার্তা দেন। স্বতঃপ্রণোদিতভাবে রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত ঘোষণায় জানিয়ে দিয়েছেন, শনিবার থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ছে বলে জানান তিনি। এই ঘটনায় রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত একেবারে চরমে উঠে গেল।
রাজ্যের বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল শীঘ্রই। তার আগে রাজ্যপাল টুইট করে বাজেট অধিবেশন স্থগিত করে দেন। তবে এখন অধিবেশন চলছে না। এখনও বাজেট অধিবেশনের তারিখও চূড়ান্ত হয়নি। রাজ্যপাল অধিবেশন স্থগিত করলেও তা রাজ্য সরকার সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না। রাজ্যের যুক্তি, প্রথমত এখন অধিবেশন চলছে না। আর দ্বিতীয়ত বিধানসভার অধ্যক্ষ ইচ্ছা করলে অধিবেশন ডাকতে পারেন।
তবে স্বাভাবিক নিয়মে রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে অধিবেশন শুরু করতে হয় বিধানসভায়। সেইমতো রাজ্যপাল উদ্বোধনী ভাষণ দিয়ে শুরু করেন অধিবেশন। রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনা শুরু হয়। সেই নিরিখে রাজ্যপালের অনুমতি না হলে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন শুরু হয় না। এখন রাজ্যপাল অধিবেশন শুরুর আগেই স্থগিত করে দেওয়ায় অধিবেশন শুরু নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
বিশেষজ্ঞরা এই নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। রাজ্যপাল বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়ার পর রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ কি তাঁর নিজ ক্ষমতাবলে অধিবেশন শুরু করতে পারেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে একাংশ বলেন, রাজ্যপাল অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়ার পর রাজ্যের কাছে আদালতে যাওয়া ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। একমাত্র আদালতেই পারে ফের অধিবেশন শুরুর অধিকার দিতে।
WB Guv:
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) February 12, 2022
In exercise of the powers conferred upon me by sub-clause (a) of clause (2) of article 174 of the Constitution, I, Jagdeep Dhankhar, Governor of the State of West Bengal, hereby prorogue the West Bengal Legislative Assembly with effect from 12 February, 2022. pic.twitter.com/dtdHMivIup
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছে, স্পিকার তাঁর ক্ষমতাবলে শুরু করতে পারেন অধিবেশন। রাজ্যপালের অনুমতি ছাড়াই এবং রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াই অধিবেশন চলবে। তারপর রাজ্যপাল টুইট করে অধিবেশন স্থগিতের কথা বলতে পারেন না। তাঁর এই উপায় ধোপে টিকবে না আদালতে। তিনি প্রয়োজনে চিঠি দিয়ে রাজ্যকে জানাতে পারতেন অধিবেশন স্থগিতের প্রসঙ্গটি।
তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে সাংসদ সৌগত রায় বলেন, রাজ্যপাল সাংবিধানিক সংকট তৈরির চেষ্টা করছেন রাজ্যে। তিনি টুইট করে না জানিয়ে চিঠি দিয়ে জানাতে পারতেন বিষয়টি। তিনি তা করেননি। রাজ্যপাল সংবিধান বলে ক্ষমতা পেয়েছেন, কিন্তু সেই ক্ষমতা অপব্যবহার করছেন। রাজ্যের উন্নয়ন স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।এর আগে কোনও রাজ্যপাল ১৭৪ ধারা প্রয়োগ করেননি।
কুণাল ঘোষ বলেন, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রাথমিকভাবে একটা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। তারপর কথা বলে জেনেছি, প্রথা মেনে বিধানসভা অধিবেশন শুরুর অনুমতি চাওয়া হয়েছিল রাজ্যপালের কাছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি টুইট করে স্থগিতের কথা জানিয়েছেন। আমাদের রাজ্যপালের একটা মুদ্রাদোষ হল উনি কথায় কথায় টুইট করে ফেলেন। আমাদের রাজ্যপাল অতি সবুজ মনের মানুষ। হঠাৎ প্রেমে পড়ে গেলে যেন টুইট করে ফেলবেন না। কিছু জিনিস গোপন রাখতে হয়।