এখন রাজ্য চালাচ্ছে সমাজবিরোধীরাই, ব্রিগেডে বললেন বুদ্ধ
ব্রিগেড ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় লোক সমাগম হয়েছিল ভালোই। মঞ্চে ভাষণ দিতে উঠে এ কথা স্বীকারও করেন বুদ্ধবাবু। তার পর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেন, "ওঁর আড়াই বছরের শাসনে বাংলার কোনও উন্নয়ন হয়নি। হবেও না। মানুষকে মিথ্যে কথা বলে ভুলিয়ে রেখেছেন। কেউ যাতে তা ধরে ফেলতে না পারে, তাই রোজ কাগজে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। দাবি করছেন, রাজ্য এগিয়ে চলছে। কার টাকায় এই বিজ্ঞাপন দিচ্ছে রাজ্য সরকার? আপনার টাকা, আমার টাকা। এর হিসাব মানুষকে বুঝিয়ে দিতে হবে। এখানে রাস্তা হয়নি, সেতু হয়নি। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে যা হয়েছিল, তাতে শুধু নীল রং করে দিয়েছে এরা। ছেলেমেয়েদের কাজ নেই। সিভিক পুলিশে কিছু ছেলেকে নিয়েছিল। যা টাকা দেয়, তা কহতব্য নয়। তাও আবার কবে চাকরি যাবে, কবে বসিয়ে দেবে, তা ঠিক নেই। বেকারদের চাকরি নেই, কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না, মেয়েদের সম্মান নেই। চারদিকে একটা অসহনীয় অবস্থা।" নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বোঝাপড়া করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াতে চাইছেন বলেও অভিযোগ করেন বুদ্ধবাবু।
"মিথ্যে ঢাকতে রোজ কাগজে বিজ্ঞাপন"
রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র আগাগোড়া কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলেছেন, "রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। আর আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়া বলছেন, দামাল ছেলেরা একটু দুষ্টুমি করবে। ৫০-৬০ বছর বয়সী দশাসই চেহারার লোকগুলো দামাল ছেলে বৈকি! এই যদি তাঁর মনোভাব হয়, কীভাবে রাজ্যে নিরাপত্তা আসবে? স্বৈরাচারী সরকারের প্রধান চিটফান্ডকে মদত দিচ্ছেন। ওঁর দলের এক সাংসদ এখন চিটফান্ড কেলেঙ্কারির জেরে জেলে। আবার একজন চিটফান্ডের মালিককে রাজ্যসভায় সাংসদ করে পাঠিয়েছে সম্প্রতি। এগুলো নিয়ে আমরা বলছি বলে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের মুখ বন্ধ করা যাবে না। এই ব্রিগেড থেকে আমরা আপনাকে চার্জশিট দিলাম। সতর্ক থাকবেন। সময় মতো আপনাকে হিসাব দিতে হবে।"
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামী প্রমুখ। এঁরা অভিযোগ করেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার একদিকে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হানাহানি বাধানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করেছেন।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেছেন, ব্রিগেডে যাতে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা আসতে না পারেন, সেই জন্য রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় তাদের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে। টিভি-তে ব্রিগেড সমাবেশ দেখা বন্ধ করতে কিছু জায়গায় কেবল অপারেটরদের ভয় দেখিয়ে তার কেটে দিতে বাধ্য করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইএম বাইপাসের কাছে আরএসপি-র একটি অফিস হামলা চালিয়ে শাসক দল দখল করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিমানবাবু।