করোনার আবহেও ঐতিহ্য ও পরম্পরা ধরে রেখে জৌলুস গোকনা কালীবাড়িতে
করোনার আবহেও ঐতিহ্য ও পরম্পরা ধরে রেখে জৌলুস গোকনা কালীবাড়িতে
এবছর করোনা অতিমারী পরিস্থিতির মধ্যেও ঐতিহ্য পরম্পরা ধরে রেখে জাঁকজমক করেই পুজো হবে গোকনা কালীবাড়িতে। প্রশাসনের নির্দেশে করোনা স্বাস্থ্য-সুরক্ষা বিধি মেনে পুজোর আয়োজন হচ্ছে বলেই জানান বর্তমান পুজো কমিটির সদস্য গৌতম হালদার। তিনি আরোও জানান, প্রত্যেক বছরের মতো এবছরেও প্রায় ১০ টির মতো পাঁঠা বলি হবে এখানে। হবে কুমড়ো, আখ বলিও।
গ্রামের আদি বাসিন্দারা জানান, গ্রামেরই বহু পুরানো এবং জাগ্রত এই গোকনা কালী মন্দিরের মা ভবানী। অনেক ঐতিহ্যমন্ডিত ও তথ্য বিজড়িত এই কালী মন্দির। জমিদারি আমল থেকেই চলে আসছে মা ভবানীর পুজো। বর্তমানে নিজেদের উদ্যোগেই প্রাচীন ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে সাড়ম্বরে এই কালীপুজো করেন গোকনার বাসিন্দারা। এছাড়াও নিত্য পুজোর আয়োজনও করেন তাঁরাই।
জানা গিয়েছে, টাকির জমিদারদের কাছ থেকে পত্তনি পেয়ে হালদাররা এখানে বসবাস শুরু করেছিলেন। তাঁরাই এখানে খড়ের গাদার তলার থানে ছাঁটের আকারের মা ভবানীর পুজো করতেন। পাথরের মা ভবানীর কালী মন্দির নির্মিত হয় ১৩১৯ সালের ১৬ বৈশাখ। মন্দির সংস্কার হয় ১৩৮৮ সালে। এর অনেক বছর আগে খড়, গোলপাতার ছাউনির মন্দির ছিল এবং হেমন্তের কার্তিকী অমাবস্যার রাতে শ্যামাপূজা হত।
কথিত আছে, ধান্যকুড়িয়ার জমিদার মহেন্দ্রনাথ গাইনের ছেলে মরণাপন্ন হলে স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি এই মন্দিরে আসেন। মায়ের আশীর্বাদে জমিদারের ছেলে পুনর্জীবন লাভ করে। এরপর মহেন্দ্রনাথ সেখানে পাকা গাঁথুনির মন্দির নির্মাণ করে দেন। তার আগে থানটি ছিল প্রায় তিনশা বছরেরও বেশি পুরনো। জমিদার মন্দির পাকা করার প্রস্তাব দিলে পুরোহিত কালীধন হালদারের জমি থেকে মাটি নিয়ে ইট পুড়িয়ে পুরনো থানের পাশেই পাকা গাঁথুনির বড় মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। আগে ছোট প্রতিমা মন্দিরের পিছনের পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয় এবং কৃষ্ণনগর থেকে দেড়শো বছর আগে প্রতিমা নিয়ে আসেন জমিদার মহেন্দ্র গাইন চতুর্দোলায় চড়িয়ে। পুরনো প্রতিমা পুকুরে বিসর্জন দিলেও পুরনো থানের ঘটটি নতুন মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হয়, যার বয়স এখন প্রায় পাঁচশো বছর।
এই মন্দিরে মা ভবানীর সঙ্গে পঞ্চানন শিব, নারায়ণও পূজিত হন। এক সময় ডাকাতরা এই মন্দিরের পিছনের পুকুরে ডুব দিয়ে মা ভবানীর পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত বলে কথিত আছে। মন্দিরে পূজিত তিনটি শিলাখণ্ড সম্পর্কে শোনা যায়, একদা জনৈক গ্রামবাসীর জমিতে লাঙ্গলের ফলায় তিনটি শিলাখণ্ড গড়িয়ে চলে আসে। বর্তমানে হালদার বংশেরই অরুণ হালদার পুজো করে আসছেন। ঐতিহ্যবাহী এই কালীমন্দির প্রতি কালীপুজোর রাতে সেজে ওঠে স্বমহিমায়। মন্দিরে পাঁঠা বলি, কুমড়ো বলি হয়ে থাকে। গ্রামবাসীর জন্য মন্দিরে ভোজনের আয়োজন থাকে।
উত্তর প্রদেশে কুলদীপ সেনগারের কেন্দ্রে উপনির্বাচনে কোন পার্টির হাওয়া জোরালো! একনজরে ভোট চিত্র