শতবর্ষ প্রাচীন এই হাজার হাত কালীর পুজো, যার টানে ছুটে আসেন ভক্তরা
হাওড়ার শিবপুরে বিখ্যাত হাজার হাতের কালী, শতবর্ষ প্রাচীন এই মন্দির ঘিরে অনেক লোকগাথা প্রচলিত, দক্ষিণ ভারতেও এই মন্দির বিখ্যাত
গত বছর দুর্গাপুজোয় দেশপ্রিয় পার্কের থিম ছিল হাজার হাতের দুর্গা। বড় দুর্গার পর হাজার হাতের দুর্গা দেখতে ভিড় কম হয়নি। হাজার হাতের দুর্গা নিয়ে মাতামাতি হলেও অনেকেই জানেন না হাজার হাতের কালীর কথা। কলকাতা বা রাজ্যে না হলেও হাওড়া জেলায় কিন্তু বিখ্যাত হাজার হাতের কালীর কথা। কোনও ক্লাব নয়, হাওড়ার শিবপুরের ওলাবিবিতলায় হাজার হাতের কালীর মন্দির শতবর্ষ প্রাচীন। দক্ষিণ ভারতেও এই কালীমূর্তির মহিমা কম বিখ্যাত নয়।
মন্দিরের ইতিহাসের সূত্রপাত ১৮৮০ সালে। কথিত আছে, শিবপুরের ওলাবিবিতলায় মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির ছেলে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মা চণ্ডীর স্বপ্নাদেশে কালীর ওই রূপ দেখতে পান তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। চণ্ডীপুরাণ অনুযায়ী, অসুর বধের সময়ে দেবী দুর্গা অনেকগুলি রূপ ধারণ করেছিলেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল তাঁর হাজার হাতের অবতার।
আশুতোষ মুখোপাধ্য়ায় স্বপ্নাদেশ তো পেলেন, কিন্তু সেসময় তাঁর মন্দির নির্মাণ করে হাজার হাত কালী রূপে মা চণ্ডীকে প্রতিষ্ঠা করার মত সামর্থ্য ছিল না। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণেই সেসময়ে মন্দির নির্মাণে এগিয়ে আসে স্থানীয় একটি পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দারাও মন্দির নির্মাণে উঠে পড়ে লাগেন। এভাবেই বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন প্রতিষ্ঠিত হয় হাজার হাত কালী মন্দির। এই কালী মন্দির হলেও এখানে বলির প্রথা কোনওদিনই ছিল না।
বছরে দুদিন, অর্থাৎ বুদ্ধ পূর্ণিমায় প্রতিষ্ঠা দিবস ও কালীপুজোর দিন এই মন্দিরের জাঁকজমক থাকে সেই আগের মতই। আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পরিবারই বংশানুক্রমে এই মন্দিরের সেবায়েতের কাজ করে। তবে কথিত আছে, মায়ের হাজার হাত নাকি গোনা যায় না। স্থানীয়দের মতে, এই মন্দির খুবই জাগ্রত। ভক্তিভরে কিছু চাইলে মা কালী কাউকে ফিরিয়ে দেন না।