ফল নিয়ে অসন্তোষ, আত্মঘাতী বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় এখন ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তোপ দাগতে শুরু করেছেন বহু ছাত্র-ছাত্রী।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় এখন ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তোপ দাগতে শুরু করেছেন বহু ছাত্র-ছাত্রী। প্রকাশিত হয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের রিভিউ ফল। কিন্তু, এই ফল নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ভোটের কারণে স্নাতক স্তরের পরীক্ষা এগিয়ে নিয়ে আসাতেও আপত্তি জানিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে বর্ধমানের মেমারির রসুলপুরে বন্ধ ঘর থেকে টুকটুকি মালো নামে এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, টুকটুকি মেমারির বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। তাঁর বন্ধুদের অভিযোগ, প্রথম বর্ষে যে ফল করেছিল দ্বিতীয় বর্ষেও হবহু একই নম্বর পায় টুকটুকি। এই নিয়ে টুকটুকি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। খাতা রিভিউ করতে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, তাতেও নম্বরের কোনও হেরফের হয়নি। অভিযোগ, প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় যেমন যেমন যেমন নম্বর ছিল সেই একই নম্বর টুকটুকির দ্বিতীয় বর্ষের মার্কশিটে উল্লেখ ছিল। বাড়িতেও ফল নিয়ে বাবা-মা-র কাছে বকুনি খেয়েছিলেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যায় একটু দেরি করে বাড়ি ঢুকেছিলেন টুকটুকি। এই নিয়ে বাড়িতে বকাও খান তিনি। এরপরই সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট। এতে কী লেখা রয়েছে তা অবশ্য জানা যায়নি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
বন্ধুদের দাবি, ফল বিতর্কের প্রভাব টুকটুকির মনের উপরে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তাঁদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। টুকটুকি মেধাবী ছাত্রী বলেই এলাকায় পরিচিত ছিল। কিন্তু, স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের ফল মনমতো হয়নি। এরপর দ্বিতীয় বর্ষের ফলও একই রকম হওয়ায় সে মনোকষ্টে ভুগছিল বলেই দাবি বন্ধুদের। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা এবার নির্দিষ্ট সময়ের এক মাস পরে হয়। এরপর ফল প্রকাশ ও রিভিউ-এর ফল প্রকাশেও বিলম্ব ঘটে। তারপর বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা এপ্রিলে মাসে করার সিদ্ধান্ত নেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
দ্বিতীয় বর্ষের ফল খারাপ হওয়ায় চিন্তায় পড়েছিলেন টুকটুকি। উপর থেকে পরীক্ষা এপ্রিল মাসে এগিয়ে আসায় প্রস্তুতি নিয়েও চিন্তা করছিলেন টুকটুকি। বন্ধুরা টুকটুকির আত্মহত্যার জন্য় বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ফল বিতর্ক-কে দায়ী করলেও পরিবার তেমন জোরালো কোনও দাবি করেনি। পরীক্ষা এবং ফল নিয়ে যে তাঁদের মেয়ে চিন্তিত ছিল তা স্বীকার করেছে টুকটুকির পরিবার। এদিকে, এদিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক ভবনের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র-ছাত্রীরা।