প্রেম করার ‘অপরাধে’ সালিশি সভায় জরিমানা, অপমানে আত্মঘাতী তরুণী
রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রেম করার ‘অপরাধ'-এ ক্লাবে আটকে হেনস্থা করা হয়েছিল তরুণীকে। জরিমানা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার পর লজ্জায়-অপমানে আত্মঘাতী হলেন ওই তরুণী।
পূর্ব মেদিনীপুর, ২ নভেম্বর : রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রেম করার 'অপরাধ'-এ ক্লাবে আটকে হেনস্থা করা হয়েছিল তরুণীকে। জরিমানা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার পর লজ্জায়-অপমানে আত্মঘাতী হলেন ওই তরুণী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির বজবজিয়াতে। মঙ্গলবার রাতে ওই তরুণীর নিথর দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান আপমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ফের সালিশি সভা বসিয়ে গ্রামের মোড়লদের মাতব্বরি। তারই জেরে আরও একটি প্রাণ চলে গেল। তবু কিছুতেই হুঁশ ফিরছে না মাতব্বরদের। সমানে চলছে 'দাদাগিরি'। ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে এক যুবকের সঙ্গে কথা বলছিলেন ওই তরুণী।
তাঁদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে আটক করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর স্থানীয় একটি ক্লাবে যুগলকে আটকে রাখা হয়। ক্লাব সদস্যরা সালিশি সভা বসায় দুই প্রেমিক-প্রেমিকার বিচারে। মাতব্বরদের বিচারে দোষীসাব্যস্ত দুই তরুণ-তরুণীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানার নিদান দেওয়া হয়। কিন্তু ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার মতো অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল না তাঁদের। পরে ন'হাজার টাকায় রফা হয়।
তারপরই মুক্তি মেলে উভয়ের। বহু রাত পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়। ঘরে ফিরে লজ্জায়-অপমানে চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন ওই তরুণী। বুধবার সকালে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে যুবকটিরও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ওই যুবক ও তাঁর পরিবার বেপাত্তা বলেই জানতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ক্লাব সদস্যদের বিরুদ্ধে মাতব্বরির অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।