নিজের গ্রামেই হেরে যান দেব! এবার জয়ের খোঁজে ‘খোকাবাবু’র প্রত্যাবর্তন মহিষদায়
তিনি তারকা। তিনি সাংসদ। গত লোকসভা নির্বাচনে তিনি জিতেছিলেন প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার ভোটে। এবারও তিনি নির্বাচনে লড়াই করছেন। তিনি নিশ্চিত, তাঁর দলও নিশ্চিত যে, তিনিই এবার জিতছেন।
তিনি তারকা। তিনি সাংসদ। গত লোকসভা নির্বাচনে তিনি জিতেছিলেন প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার ভোটে। এবারও তিনি নির্বাচনে লড়াই করছেন। তিনি নিশ্চিত, তাঁর দলও নিশ্চিত যে, তিনিই এবার জিতছেন। শুধু তাই নয়, এবার তাঁর জয়ের ব্যাবধান আরও বাড়বে বলেই আশাবাদী। তিনি দীপক অধিকারী। লোকে যাকে চেনে দেব নামে। এবারও তিনি ঘাটাল কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।
গলার কাঁটা মহিষদা
তবে গত বারের জয়ে এবং এবার বিপুল জয়ের আশায় গলার কাঁটার মত বিঁধে আছে একটি গ্রাম- মহিষদা। কেশপুরের মহিষদা। যে গ্রামে ছোটবেলা কেটেছিল তার। এখনও এই গ্রামেই বাস করেন তার জেঠিমা, জেঠতুতো দাদা-বৌদিরা। এলাকায় এলে, সময় পেলেই তিনি ঘুরে যান নিজের গ্রামে। এবারও নির্বাচনী প্রচার শুরু করার আগে মহিষদা গ্রাম ঘুরে গিয়েছেন তিনি। তার প্রচারে বারে বারে ফিরে এসেছে এই গ্রামের কথা, গ্রামে তার ছেলেবেলার কথা।
বিধানসভাতেও হার তৃণমূলের
কিন্তু এই গ্রামটাই তার কাছে একটা কাঁটা হয়ে আছে। কারণ, গত বার প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার ভোটে জিতলেও এই গ্রামে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। এমনকী ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেশপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের শিউলি সাহা মোট ১,৪৬,৫৭৯টি ভোট পেয়ে ১,০১,১৫১ ভোটের ব্যবধানে জিতলেও তিনিও হেরে গিয়েছিলেন মহিষদা গ্রামে।
আজও সিপিএমের গ্রাম
এই গ্রাম এখনও অনেকের কাছে সিপিএমের গ্রাম নামেই পরিচিত। তাই দেবের নিজের গ্রামে তাদের প্রার্থীকে জেতাতে মরিয়া তৃনমূল কংগ্রেস। এই গ্রামে শুধুমাত্র ‘গ্রামের ছেলে'কে ভোট দেওয়ার আহ্বান দিয়ে দেওয়াল লিখন নয়, সকলের কাছে গিয়েই শাসক দলের নেতা কর্মীরাও ‘আবেদন' করছেন গ্রামের বুথে দেবকে জিতিয়ে সম্মান বাঁচাতে।
দেব যখন রাজু
অন্য জায়গায় তাঁরা জেতার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও দেবের নিজের গ্রামেই দেবকে জেতাতে সিপিএম সমর্থকদের দারস্থ হচ্ছেন তারা। এই গ্রামে দেবকে অনেকেই চেনে ‘রাজু' বলে। রাজু দীপক অধিকারীর ডাক নাম। তাকে গ্রামের অনেকেই সেই নামেই ডাকে। কিন্তু নিজের গ্রাম মহিষদার বুথেই হেরেছিলেন ‘রাজু'।
‘কলঙ্ক’ মুক্ত হতে চান দেব
২০১৬ সালে কেশপুরে তৃণমূল কংগ্রেস রেকর্ড ভোট পেয়ে জিতলেও মহিষদায় ফের হেরে গিয়েছিল শাসকদল। এবার শাসকদল মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে তাঁদের প্রার্থীকে গ্রামে জেতাতে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বুথ উদ্ধারের চেষ্টা চালানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারকা প্রার্থীর গায়ে এই ‘কলঙ্ক' এবার আর লাগতে দিতে চায় না শাসকদল।
‘খোকাবাবু’ আশীর্বাদপ্রার্থী
ভোটের প্রচারে এসে তার জেঠিমার আশীর্বাদ নিতে গ্রামে এসেছিলেন ‘খোকাবাবু'। গত নির্বাচনে নিজের গ্রামেই হেরে যাওয়া নিয়ে প্রশ্নে দেবের সহাস্য উত্তর, " আরে এখানে আমাদের মিটিং হয়েছিল। ওরা (বামফ্রন্ট) কাউকে ঢুকতেই দেয়নি। মিটিংয়ে লোকই হয়নি। তারপরেও এদের সঙ্গে চা খেয়েছি। তবে আমার বিশ্বাস, এবার মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছি। মানুষ আমায় ভোট দেবে।"