মাতৃঘাতক হওয়া থেকে যুবককে বাঁচালেন দম্পতি! আর সেই যুবকের হাতেই খুন দম্পতির শিশুকন্যা
একেই বলে নিয়তি। প্রতিবেশী তরুণকে মাতৃ হত্যার দায় থেকে বাঁচিয়েছিলেন প্রতিবেশী দম্পতি। আর তাঁদের শিশুকন্যাকেই খুনের অভিযোগ দায়ের হল সেই প্রতিবেশী তরুণের বিরুদ্ধে।
একেই বলে নিয়তি। প্রতিবেশী তরুণকে মাতৃ হত্যার দায় থেকে বাঁচিয়েছিলেন প্রতিবেশী দম্পতি। আর তাঁদের শিশুকন্যাকেই খুনের অভিযোগ দায়ের হল সেই প্রতিবেশী তরুণের বিরুদ্ধে। নৃশংস এই ঘটনা মালদহের ইংরেজ বাজার থানা এলাকার নিমাসরাই এলাকায়। শিশুকন্যার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হতেই এলাকার মানুষ অভিযুক্ত বিকি শেখের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।
জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্য়া থেকেই নিখোঁজ ছিল মুন্নিবিবি ও সমীর শেখের বছর চারেকের কন্যা। বুধবার সকালে নিমাসরাই এলাকার মহানন্দা নদীর গুজরঘাটে কচুরিপানায় শিশুকন্যার ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। মৃতদেহের মুখ ভারি কিছু দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল। সামনে অধিকাংশ দাঁত ভাঙা ছিল।
মৃত শিশুর পরিবার এই ঘটনার জন্য প্রতিবেশী বিকি শেখের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে। এরপরই ক্ষিপ্ত গ্রামবাসী চড়াও হয় বিকি-র বাড়িতে। ভাঙচুর করার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবিতে নিমসরাই এলাকার মালদহ-পুখুরিয়ায় রাজ্য সড়ক অবরোধও করা হয়।
বছর ঊনিশের বিকি শাটারিং মিস্ত্রী। কিন্তু, মাদকাসক্ত বিকি প্রায়ই বাড়ি ফিরে বাবা-মা-কে মারধর করত বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে বিকি মাদক সেবন করে এসে মা-কে খুনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ছেলের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে বিকির মা নূরজাহান প্রতিবেশি মুন্নিবিবি ও সমীর শেখের বাড়িতে ছুটে যান। সমীর শেখ এরপর বিকিকে গিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনি নেশাগ্রস্ত বিকিকে দুটো চরও মারেন। বিকি জানায় তার টাকার দরকার। পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছে। পেশায় রাজমিস্ত্রী সমীর শেখ বিকিকে শান্ত করতে ১০০ টাকাও দেন। অভিযোগ এরপর সেই টাকা নিয়ে বিকি নেশা করতে চলে যায় এবং মুন্নি ও সমীরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
সোমবার রাত আটটায় মেয়েকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বসেছিলেন মুন্নিবিবি। মেয়ের জন্য ওষুধ আনতে ঘরে ঢুকেছিলেন। পাঁচ মিনিট পরে এসে দেখেন যে মেয়ে নেই। রাতভর তল্লাশির পরও মেয়ের খোঁজ না পাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে ইংরেজ বাজার থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়। বিকি-র হুমকির বিষয়েও পুলিশকে জানান মুন্নি ও সমীর। মঙ্গলবার রাতেই বিকিকে হেফাজতে নিয়ে নেয় পুলিশ। টানা জিজ্ঞাসাবাদে সে মুন্নি ও সমীরের শিশুকন্য়াকে অপহরণ করে খুনের কথা স্বীকার করে। বুধবার সকালে পুলিশ দেহ উদ্ধার করার আগেই স্থানীয়রা গুজরঘাটে কচুরিপানার মধ্যে থেকে দেহ উদ্ধার করে। এরপরই উত্তেজিত জনতা বিকির বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং মালদহ-পুখুড়িয়া রাজ্যসড়ক অবরোধ করে।